[ অনলাইন ] 28/04/2024 |
|
|
|
ঋণ আদায়ের নামে কৃষক হয়রানি নহে |
|
|
দেশব্যাপী বিভিন্ন ব্যাংক কৃষকের বিরুদ্ধে সোয়া লক্ষাধিক সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করিয়াছে মর্মে শনিবার সমকালে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হইয়াছে, উহা বেশ উদ্বেগজনক। প্রতিবেদন মতে, প্রায় ১২ সহস্র কৃষকের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হইয়াছে, যদিও অনেক কৃষক অর্থ পরিশোধ করিবার পরও হয়রানির শিকার হইয়াছেন বলিয়া অভিযোগ উঠিয়াছে। প্রায় ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের জোগানদাতাদিগের একটা অংশের এহেন দুর্ভোগ নিঃসন্দেহে দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রতিবেদন মতে, উক্ত কৃষকদিগের জনপ্রতি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩০ সহস্র টাকা, একই ব্যাংক খাত হইতে গৃহীত বহু বৃহৎ ব্যবসায়ীর খেলাপি ঋণের তুলনায় অঙ্কটা আদৌ উল্লেখযোগ্য নহে। উপরন্তু, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে উক্ত কৃষকেরা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হন। সম্ভবত এই কারণেই সরকার বিভিন্ন সময় ব্যাংকগুলিকে কৃষকদিগের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিতে নিষেধ করিয়াছে। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই আদেশ আমলে নেয় নাই। বরং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এমন পরিস্থিতির জন্ম দিয়াছে, যেন উহারা অতীতের দাদনদারদের ন্যায় ব্যবসা খুলিয়াছে। দেশের প্রভাবশালী যে ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদগণ এই সকল ব্যাংক হইতে সহস্র কোটি টাকা আত্মসাৎ করিয়াছেন, তাহাদের বিরুদ্ধে কোনো বিশেষ তৎপরতা নাই। কিন্তু দেশের প্রান্তিক শ্রেণির কৃষকদিগকে হয়রানি করিতে উহাদের মনে দ্বিধা জাগে না!
অন্যায় হইলেও আজ অবধি বৃহৎ ঋণখেলাপিদিগের আবেদনে সাড়া দিয়া ব্যাংকগুলি শত-সহস্র কোটি টাকার সুদ–এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে আসলও মাফ করিতে কসুর করে নাই। একই ধারায় সরকার ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সহিত কথা বলিয়া আলোচ্য কৃষিঋণও যথাসম্ভব মওকুফ করিতে পারে। যদি একান্তই উহা সম্ভবপর না হয়, তাহা হইলে এই সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রদত্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নও করা যাইতে পারে বলিয়া আমরা মনে করি। মোদ্দা কথা, কর্তৃপক্ষ আলোচ্য কৃষি ঋণ আদায়ে যে ব্যবস্থাই গ্রহণ করুক, তাহাতে মানবিক দৃষ্টি ও বোধ থাকা আবশ্যক।
|
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|