[ পাতা ১০ ] 03/05/2024 |
|
|
শিরিশ কাগজ |
আমদানির আড়ালে অর্থ পাচারের অভিযোগ |
|
|
দেশের বাজারে শিরিশ কাগজ আমদানির আড়ালে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে আমদারিকারকদের বিরুদ্ধে। আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে শিরিশ কাগজের দাম কম দেখিয়ে এ অর্থ পাচার করা হচ্ছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছে দেশীয় উৎপাদনকারীরা। ফলে একদিকে দেশের অর্থ পাচার হচ্ছে, অন্যদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে দেশে বার্ষিক চার থেকে সাড়ে চার হাজার টন শিরিশ কাগজের চাহিদা রয়েছে। দেশে আসবাবপত্র ও অটোমোবাইল তৈরির পাশাপাশি বস্ত্র ও নির্মাণ শিল্পে শিরিশ কাগজের ব্যবহার হয়। চাহিদা মেটাতে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক আমদানিকারক কোম্পানি কাগজ আমদানি করে। এ পরিমাণ কাগজের বাজার মূল্য ২০০-২৫০ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২২ সালে শেলটেক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গ্রাইন্ড টেক লিমিটেড শিরিশ কাগজের কারখানা স্থাপন করে। এর ফলে দেশে কাগজ উৎপাদনের মাধ্যমে কাগজের চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা তৈরি হয়। সক্ষমতা তৈরি হলেও এখনো আমদানির মাধ্যমেই চাহিদা পূরণ হচ্ছে এ খাতের। বিগত ছয় মাসের আমদানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কিছু প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবহার ও কিছু প্রতিষ্ঠান বাজারজাত করতে শিরিশ কাগজ আমদানি করছে। দুই ধরনের আমদানিকারকের শুল্কায়নযোগ্য মূল্যের মধ্যে পার্থক্য দেখা গেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতি কেজি শিরিশ কাগজ ১-২ ডলারে শুল্কায়ন করা হয়েছে। বাজার যাচাই করে দেখা যায়, প্রতি শিট কাগজ ১৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজিতে ৪০-৫০টি শিট থাকে। প্রতিটির গড় মূল্য ২০ টাকা হিসেবে প্রতি কেজির মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৯০০ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি কাগজের আমদানি শুল্ক ৫ ডলারের বেশি। এর অর্থ হলো আমদানিকারকরা কম মূল্যে শুল্কায়ন করছেন। শুল্কায়নবহির্ভূত মূল্য পরিশোধ করছেন অন্য কোনো মাধ্যমে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবাসন খাতের প্রতিষ্ঠান শেলটেক দেশে প্রথমবারের মতো শিরিশ কাগজের কারখানা চালু করেছে। তবে আমদানিকারকদের আন্ডার ইনভয়েসিং, অর্থ পাচারের মতো ঘটনায় দেশীয় বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা যায়, শিরিশ কাগজ আমদানিতে ট্যারিফ ভ্যালু বা সর্বনিম্ন শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারিত নেই। এতে আমদানিকারকের ঘোষিত মূল্যেই শুল্কায়ন করতে হয় কাস্টমসকে। প্রতি কেজি শিরিশ কাগজ ১-২ ডলারে শুল্কায়ন করা হচ্ছে। এর মূল্য ঘোষিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। সর্বনিম্ন শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ করা হলে তবেই দেশীয় শিল্পকে বাঁচানো সম্ভব। সম্প্রতি শিরিশ কাগজের আমদানি শুল্ক বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।
জানতে চাইলে শেলটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ বলেন, ‘প্রতি কেজি শিরিশ কাগজ ১-২ ডলার দামে আমদানিকারকরা নিয়ে আসে। তার বিপরীতে দেশে উৎপাদন করতে আমাদের কেজিপ্রতি উৎপাদন খরচ হয় হয় ৭-৮ ডলার। এতে আমরা অর্থনৈতিকভাবে সংকটের মধ্যে পড়ছি। ব্যবসায়ীদের আমদানীকৃত শিরিশ কাগজের দাম কম হওয়ায় আমরা প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়ছি। দেশে শিরিশ কাগজের উৎপাদন পুরোটাই আমদানির ওপর নির্ভরশীল। পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য গ্রাইন্ড টেক লিমিটেড ২০২০ সালে ৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। আমরা বাজারে প্রথম প্রবেশ করে সুবিধা নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা লাভ করতে পারছি না। কারণ আমাদের উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কম দামে পণ্য বিক্রি করতে হয়।’ বাণিজ্যিক আমদানিকারকরা শুল্ক ফাঁকি দিতে আন্ডার ইনভয়েসিং করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|