চট্টগ্রামে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিকে যৌথভাবে জামিন করাতে গিয়ে শোকজ খেলেন
পদ্মা ব্যাংকের এমডি। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক
মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের কোনো লিখিত
মঞ্জুরিপত্র ছাড়া এবং টেলিফোনিক নির্দেশে বিধি বহির্ভূতভাবে ব্যাংকের পক্ষে
জামিন আবেদন করায় এ শোকজ করা হয়।
ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় কর্তৃত্ববিহীন এরূপ যৌথ জামিন আবেদনে স্বাক্ষর
করায় বিস্ময় প্রকাশ করেন আদালত। আগামী ৯ মে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিকে জামিন করাতে মরিয়া
পদ্মা ব্যাংক। ৮৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করায় পদ্মা ব্যাংক জেসিকা
গ্রুপের মালিক জসিম উদ্দিন আহমদ ও তাঁর স্ত্রী তানজিনা সুলতানা জুহিকে
পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ডিক্রিদার পদ্মা ব্যাংক ও দায়িক জসিম উদ্দিনের
পক্ষে ৫ কোটি টাকার পে-অর্ডার এবং ৭ কোটি টাকার তারিখবিহীন চেক আদালতে
দাখিল করে তাদের বিরুদ্ধে ইস্যু করা ওয়ারেন্ট রিকল এবং সম্পত্তি জব্দের
আদেশ প্রত্যাহার করতে যৌথভাবে আবেদন করা হয়।
অর্থঋণ আইনের ৩৪(৬) ধারায় ৮৮ কোটি টাকার ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ২২ কোটি টাকা
পরিশোধ না করায় এবং তারিখবিহীন চেক গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় ডিক্রিদার পদ্মা
ব্যাংক এবং ঋণখেলাপির যৌথ দরখাস্ত নামঞ্জুর করেন আদালত। আদালতে উপস্থিত
ব্যাংকের কর্মকর্তা প্রধান কার্যালয়ের টেলিফোনিক নির্দেশে এমন দরখাস্ত
দাখিল করেছেন বলে উল্লেখ করেন। প্রধান কার্যালয়ের টেলিফোনিক নির্দেশে একজন
ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিকে আইনের শর্ত পূরণ ছাড়া জামিন ও সম্পত্তি অবমুক্ত করার
আবেদন করায় পদ্মা ব্যাংকের এমডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ
ব্যাংক গভর্নর বরাবরে কেন আদেশ পাঠানো হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর নির্দেশ
দেন আদালত।
গত ৩০ এপ্রিল চট্টগ্রামে ৮৯ কোটি ঋণখেলাপির মামলায় জেসিকা গ্রুপের এমডি
জসীম উদ্দিন আহমদ ও তাঁর স্ত্রী তানজিনা সুলতানা জুহিকে পাঁচ মাস করে
কারাদণ্ড দেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে
নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছিল। তাদের নামে থাকা বিপুল সম্পদ জব্দ করারও
নির্দেশ দেওয়া হয়।
জসীম উদ্দিন আহমদ চট্টগ্রামের চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া বদুরপাড়ার মনির
আহমেদ বাড়ির মফজল আহমদের ছেলে। তানজিনা সুলতানা জুহি এ ঋণের গ্যারান্টার।
ব্যাংকের ঋণ মামলায় গত বছরের ২৯ জানুয়ারি সোলে ডিক্রি থেকে এই জারি
মামলার উদ্ভব হয়। মূল অর্থঋণ মামলায় ৮৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা হলেও সুদ মওকুফ
সুবিধা দিয়ে ৬০ কোটি টাকা মূল মামলাটি নিষ্পত্তি হয়েছিল। শর্ত অনুযায়ী
কিস্তিতে টাকা পরিশোধ না করায় সোলেনামা বাতিল হয়। সোলেনামার শর্ত অনুযায়ী,
সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিল করে ডিক্রিদার ব্যাংক হালনাগাদ সুদসহ ৮৯ কোটি ৩৯
লাখ টাকা আদায়ের দাবিতে এ জারি মামলা করে।