Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
গলার কাঁটা ২০১ কিশোর গ্যাং [ অনলাইন ] 04/05/2024
গলার কাঁটা ২০১ কিশোর গ্যাং
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় চট্টগ্রাম নগরীতে কিশোর অপরাধীদের চক্র বা কিশোর গ্যাংয়ের অপরাধ কিছুটা কমেছিল। তবে ফের কিশোর গ্যাং সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন নামে এলাকাভিত্তিক নতুন নতুন সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে তুলেছে কিশোর গ্যাং। এলাকায় কথিত বড় ভাইদের হয়ে রাজনৈতিক আধিপত্য বজায় রাখতে খুন, জায়গা দখল, অপহরণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারামারি, অস্ত্রবাজিসহ নানা অপরাধে জড়াচ্ছে এসব দলের সদস্যরা। গ্রেপ্তার-কারাদণ্ডেও দমানো যাচ্ছে না তাদের। জামিনে বেরিয়ে যেন দ্বিগুণ উৎসাহে একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর অপরাধীরা। এর ফলে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বেড়েই চলেছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।

যারই ধারাবাহিকতায় নগরের আলকরণে স্ক্র্যাপ মালামাল বিক্রি নিয়ে পুরনো দ্বন্দ্বের জেরে দুই কিশোর গ্যাং গ্রুপের মধ্যে গেল দুদিনে (বুধ ও বৃহস্পতিবার) সংঘর্ষ, দোকানপাট ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আলকরণ এলাকার কিশোর গ্যাং লিডার ডোম আসিফ এবং ফিরিঙ্গীবাজার এলাকার কিশোর গ্যাং নেতা আকাশ গ্রুপের মধ্যে এসব সহিংসতার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দুই দফায় নগরের কোতোয়ালি ও সদরঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

সংঘর্ষে নগরের ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লবের সহকারী মো. সালাউদ্দিন গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাধীন।

সংঘর্ষে কাউন্সিলরের সহকারী ছাড়া আরও কয়েকজন আহত হলেও তাদের বিষয়ে তথ্য নেই পুলিশের কাছে। দোকানপাট ও গাড়ি ভাঙচুর হলেও পুলিশ বলছে সংঘর্ষ নয়, দুই গ্রুপের মধ্যে স্ক্র্যাপ বিক্রির দ্বন্দ্ব থেকে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে আলকরণ ২ নম্বর গলিতে এবং আগের দিন বুধবার বিকেলে এ সংঘর্ষ হয়। নগরের অভয়মিত্র ঘাট এলাকায় জাহাজ থেকে নামানোর সময় অনেক স্ক্র্যাপ নদীতে পড়ে যায়। সেই স্ক্র্যাপ পানি থেকে তুলে বিক্রি করা হয় বিভিন্ন ভাঙাড়ির দোকানে। স্থানীয় দুই-তিনটি সিন্ডিকেট এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে।

মূলত স্ক্র্যাপ বিক্রি নিয়ে আলকরণ ওয়ার্ডের ৩ নম্বর গলির অভির সঙ্গে ২ নম্বর গলির আকাশের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর জেরে গত বুধবার বিকেলে অভির সঙ্গে আকাশের কথাকাটাকাটি হয়। পরে অভির হয়ে কিশোর গ্যাং লিডার ডোম আসিফ অর্ধশতাধিক কিশোর ‘অপরাধী’ নিয়ে বুধবার রাতে আলকরণ মসজিদ ও চক্রবর্তী কলোনি এলাকায় দোকানপাট ও একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে।

সবশেষ গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুনরায় আলকরণ এলাকায় আনসার গলির সামনের কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করে ডোম আসিফ ও তার সহযোগীরা। খবর পেয়ে ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব এবং আলকরণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। কিশোর গ্যাং সদস্যদের নিবৃত্ত করতে গেলে কাউন্সিলর হাসান মুরাদের সহকারী সালাউদ্দিনের ওপর হামলা চালায় আসিফের কিশোর গ্যাং সদস্যরা।

ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, ‘ফিরিঙ্গীবাজার এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অপতৎরতা থামাতে গিয়ে আমার সহকারী সালাউদ্দিন মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তিনি এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিশোর সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসেছিল। আমার সামনেই তারা সালাউদ্দিনের ওপর হামলা করে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদরঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ ফেরদৌস জাহান বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটেছে কোতোয়ালি থানা এলাকায়। কিছু অংশ সদরঘাট থানার অধীনে হওয়ায় পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছিল।’ আর কোতোয়ালি থানার ওসি এসএম ওবায়েদুল হক বলেন, ‘সংঘর্ষ নয়, সেখানে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

চট্টগ্রামে দিনে দিনে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে কিশোর অপরাধীদের চক্র। আর এসব কিশোর গ্যাং পৃষ্ঠপোষকতা বা প্রশ্রয় দিচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাঁচজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৬৪ জন ‘বড় ভাই’।

ঈদুল ফিতরের আগে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় চিকিৎসক কোরবান আলীর মৃত্যুর পর কিশোর গ্যাং সদস্যদের তৎপরতার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।

পুলিশের তালিকা অনুযায়ী, নগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০১টি। একেকটি গ্রুপে সদস্য আছে ৫ থেকে ১৫ জন। সব মিলিয়ে বর্তমানে নগর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কিশোর গ্যাংয়ের প্রায় দুই হাজার সদস্য। গত ছয় বছরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ৩৪টি খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে কিশোর অপরাধী চক্রের সদস্যরা। পুলিশের তালিকায় কিশোর অপরাধীদের আশ্রয়দাতা বা ‘বড় ভাই’ আছে ৬৪ জন। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কিশোর গ্যাংয়ের ১৯৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-পুলিশ।

নগর পুলিশ বলছে, কিশোর গ্যাং প্রশ্রয় দিচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাঁচজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তারা হলেন ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এসরারুল হক, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর (সাময়িক বরখাস্ত) জহুরুল আলম ওরফে জসিম, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন, ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসনাত ওরফে বেলাল এবং ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের নুর মোস্তফা টিনু। এর মধ্যে টিনু কারাগারে আছেন। বাকি চার কাউন্সিলরের বিরুদ্ধেও আছে একাধিক মামলা।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• দুবাইয়ে ৫৩২ বাংলাদেশির সম্পত্তি, কী বলছে দুদক
• মানব পাচার নিয়ন্ত্রণ করে ৭০ সিন্ডিকেট
• উপাচার্যের দুই ছেলে ও ভাগনির চাকরি, ভাড়ায় চলে স্ত্রীর গাড়ি
• শারজাহ থেকে আসা যাত্রীর শরীরে মিললো সাড়ে চার কোটি টাকার সোনা
• টেকনাফ ও রামুতে ৪ কেজি আইস উদ্ধার
• সিলেটে টাকা নিয়ে লাপাত্তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মচারী
• শারক্বিয়ার প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী গ্রেপ্তার
• অনলাইনে সক্রিয় কিডনি কেনাবেচার দালালচক্র
• ৫২৩ হজযাত্রীর টাকা নিয়ে উধাও দুই এজেন্সি
• ওষুধ নিয়ে প্রতারণা গ্রেফতার ১
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved