[ অনলাইন ] 05/05/2024 |
|
|
|
চক্রের হোতা ও ব্যাংক কর্মকর্তাসহ গ্রেপ্তার ৮ |
|
ফ্ল্যাটের জাল দলিলে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ |
ফ্ল্যাটের জাল দলিল ও ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি চক্রের হোতাসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। চক্রের হোতা জয়নাল আবেদীন ইদ্রিস মাত্র ছয় বছরে দোকান কর্মচারী থেকে ঢাকায় সাততলা বাড়ি এবং ৬টি ফ্ল্যাটের মালিক বনে গেছেন। ভূমি অফিস, ব্যাংক কর্মকর্তা ও এনআইডির কর্মচারীদের মাধ্যমে তিনি একটি প্রতারক চক্র গড়ে তুলেছিলেন বলে জানান সিআইডির প্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগের সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ এপ্রিল দৈনিক আমাদের সময়ে ‘ভুয়া দলিলের ফ্ল্যাট মর্টগেজে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ’ শিরোনামে প্রতারক জয়নাল আবেদিন ও তার চক্রকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার জয়নাল আবেদীনসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জয়নালের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। চক্রটি ফ্ল্যাট বিক্রির ফাঁদ পেতে জাল দলিলের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। সেই জাল দলিল দেখিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণও নিয়েছে। ফলে ক্রেতারা ফ্ল্যাট পায়নি। উপরন্তু ব্যাংকঋণের বোঝা চেপেছে তাদের কাঁধে।
সিআইডিপ্রধান জানান, জয়নাল আবেদীনের প্রতিষ্ঠান রুমানা জুয়েলার্স, নীড় এস্টেট প্রোপার্টিজ লিমিটেডসহ চক্রের ২৫ সদস্যের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মানিলন্ডারিং (অর্থপাচার) প্রতিরোধ আইনে মামলা করে সিআইডি। এরপর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তার প্রধান সহযোগী রাকিব হোসেন, জয়নালের ভায়রা কেএম মোস্তাফিজুর রহমান, জাল কাগজপত্র ও এনআইডি প্রস্তুতকারক লিটন মাহমুদ, ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল প্রস্তুতকারক হাবিবুর রহমান, ব্যাংক কর্মকর্তা হিরু মোল্যা, আবদুস সাত্তার ও সৈয়দ তারেক আলীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। সম্প্রতি এ মামলায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ হিসাবে, এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১১ জনকে।
মোহাম্মদ আলী মিয়া জানান, চক্রের সদস্যরা একজনের নামে একাধিক এনআইডি, টিআইএন সার্টিফিকেট তৈরি করে। সেসব নথি ব্যবহার করে ফ্ল্যাট বা জমির একাধিক ‘মূল’ দলিল বানিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়ে থাকে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ, ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী সমন্বিতভাবে প্রতারণার কাজটি করে থাকে।
তিনি জানান, জয়নাল মিরপুরে কোঅপারেটিভ মার্কেটের একটি সোনার দোকানের কর্মচারী ছিলেন জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, ২০১৭ সাল থেকে তিনি ফ্ল্যাট জালিয়াতি শুরু করেন। প্রায় শতকোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া জয়নালের এসব অপকর্মে তার দুই স্ত্রী রোমানা সিদ্দিক ও রাবেয়া আক্তার মুক্তার যোগসাজশ ছিল। প্রতারণার জন্য জয়নালের নামে ছয়টি সক্রিয় এনআইডি রয়েছে। এসব এনআইডি দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকে ৫০টির অধিক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গেছে। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সাততলা বাড়ি, তিনটি ফ্ল্যাট, মিরপুর ও আশকোনায় তিনটি ফ্ল্যাটসহ আরও বেশ কিছু সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযানের পাশাপাশি অর্থের অনুসন্ধানও চলছে।
|
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|