Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
সম্পদ অর্জনে এমপিদের চেয়ে এগিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানরা [ অনলাইন ] 07/05/2024
সম্পদ অর্জনে এমপিদের চেয়ে এগিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানরা
উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির হার কোনো কোনো ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের চেয়েও বেশি বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল টিআইবি’র ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪ (প্রথম ধাপ) হলফনামা বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে টিআইবি দেখিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ব্যবসায়ী প্রার্থীদের দাপট বেড়েই চলেছে। ব্যবসায়ী প্রার্থীদের সংখ্যা চতুর্থ নির্বাচনের তুলনায় ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ শতাংশ। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৬৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ২৪ দশমিক ৩৭ শতাংশের পেশা ব্যবসা। আবার গৃহিণী বা গৃহস্থালিকে পেশা হিসেবে দেখানো প্রার্থীদের সাড়ে ১৯ শতাংশের আয় আসে ব্যবসা থেকে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমাদের দেশে রাজনীতি ও জনপ্রতিনিধিত্ব ক্ষমতাকেন্দ্রিক। জনস্বার্থ নয় বরং ব্যক্তিস্বার্থ প্রাধান্য পাচ্ছে। আবার দলীয় শৃঙ্খলা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা কিংবা দলের নীতিগত সিদ্ধান্ত মেনে চলার মতো যে ধরনের আচরণ রাজনৈতিক দলের মতো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রত্যাশিত, তা ক্ষমতার রাজনীতির কাছে জিম্মি হয়ে গেছে। যেহেতু ক্ষমতায় যেতে পারলে সম্পদ বিকাশের সীমাহীন সুযোগ তৈরি হয়, আর ক্ষমতার বাইরে থাকলে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হয়, ফলে একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা যেরূপ আগ্রাসীভাবে রাজনীতিতে আসছেন, তারা কি সুস্থ বা যথাযথ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আসছেন? যে সকল রাজনীতিবিদরা এরূপ প্রতিকূল অবস্থায়ও সুস্থ ও জনকল্যাণমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চায় আগ্রহী, তারা প্রায় বিলুপ্ত বা ক্ষমতার রাজনীতিতে কোণঠাসা। নির্বাচন হবে, হচ্ছে, তবে বাস্তবে জনগণের জনস্বার্থকে প্রাধান্য দেয় এমন নির্বাচন কতোটুকু হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।

উপজেলা নির্বাচনের ১ম ধাপের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে টিআইবি দেখিয়েছে, অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হারে সংসদ সদস্যদের পেছনে ফেলেছেন উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। ৫ বছরে সংসদ সদস্যদের অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ছিল তিন হাজার ৬৫ শতাংশ।

সেখানে একটি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সম্পদ বেড়েছে ৪ হাজার ২০০ শতাংশের বেশি। একইভাবে, ৫ বছরে একজন চেয়ারম্যানের আয় বেড়েছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩১৯ শতাংশ, ১০ বছরে এই বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ২৩৩ শতাংশ। অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ২৫১ শতাংশ, স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদ বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার ১২ হাজার ৪০০ শতাংশ।

স্থানীয় নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণে প্রাপ্ত ফলাফলকে বিস্ময়কর উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, হলফনামা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি, অনেক জনপ্রতিনিধির আয় অস্বাভাবিক পরিমাণে বেড়েছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির হার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের চেয়েও বেশি। হলফনামায় যথাযথ কিংবা পর্যাপ্ত ও সঠিক তথ্য দেয়া হয়েছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। কোনো কোনো প্রার্থীর আয় খুবই কম দেখানো হয়েছে, যার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। আবার প্রার্থীদের যাদের আয় ও সম্পদ গগনচুম্বী হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বা তাদের নির্ভরশীলদের আয়-সম্পদের যে বিপুল বিকাশ ঘটেছে, বৈধ সূত্রের সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা এ প্রশ্নও অত্যন্ত যৌক্তিক।

তিনি আরও বলেন, বাস্তবতা হলো, প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণের মাধ্যমে জনগণ শুধু তথ্যই জানতে পারছে। তবে তার সত্যতা ও যথার্থতা যেমন দেখতে পারছি না, একইভাবে আইনের প্রয়োগ কিংবা ফল কোনোটিই দেখছি না। অথচ, এই হলফনামার সত্যতা ও যথার্থতা নিশ্চিতের দায়িত্ব যাদের সেই নির্বাচন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং দুর্নীতি দমন কমিশন স্বপ্রণোদিতভাবে খতিয়ে দেখার দায়িত্বটি পালন করছে না, যা হতাশাজনক।

টিআইবি’র বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, আইনি সীমা অর্থাৎ ১০০ বিঘা বা ৩৩ একরের বেশি জমি আছে কমপক্ষে ৮ জন প্রার্থীর। তাছাড়া, ২৩.৪১ শতাংশ প্রার্থীর ঋণ বা দায় রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ বা দায় রয়েছে ১৫২৮ কোটি টাকার। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত।

অন্যদিকে, অস্থাবর সম্পদের ভিত্তিতে নির্বাচনের প্রথম ধাপের প্রার্থীদের মাত্র ৭ শতাংশ কোটিপতি। বাকি প্রায় ৯ শতাংশ প্রার্থীর সম্পদ কোটি টাকার নিচে। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের মধ্যে ৯৪ জন কোটিপতি। আগের নির্বাচনের তুলনায় এ সংখ্যা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ (৫ম নির্বাচনে ছিল ৩৭ জন)। ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর মধ্যে ১৭ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৬ জন কোটিপতি। এ ছাড়া, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের মধ্যে বছরে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা আয় করেন এমন প্রার্থীর সংখ্যা ১৯৮ জন, যা মোট প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীর ৩৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। যা পাঁচ বছর আগের নির্বাচনের তুলনায় প্রায় আড়াইগুণ। সমপরিমাণ আয় করেন এমন ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দুই ক্ষেত্রেই সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণের কাছাকাছি।

সার্বিকভাবে প্রার্থীদের ৪০ শতাংশই আয় দেখিয়েছেন সাড়ে তিন লাখ টাকার নিচে। অর্থাৎ করযোগ্য আয় নেই তাদের। সাড়ে ১৬ লাখ টাকার বেশি আয় দেখিয়েছেন মাত্র ১০ শতাংশ প্রার্থী। প্রায় ৯৩ শতাংশ প্রার্থীর সম্পদ কোটি টাকার নিচে, বাকি ৭ শতাংশ প্রার্থীর সম্পদ কোটি টাকার বেশি।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক ও গবেষণা দলের প্রধান মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র গবেষণা দলের সদস্য ও আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট কো-অর্ডিনেটর রিফাত রহমান, কে. এম. রফিকুল আলম ও ইকরামুল হক ইভান।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তরে ওষুধ নিয়ে প্রতারণা, চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ২
• ডিজিডিপির ওষুধ সরবরাহে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ২
• কোনো কৌশলেই থামছে না মানব পাচার
• কিডনি ব্যবসায়ীরা পার পাচ্ছেন দায়সারা তদন্তে
• চট্টগ্রামে ৭ সহযোগীসহ কিশোর গ্যাং নেতা বাদশা গ্রেপ্তার
• শতকোটি টাকার জমি উদ্ধারের পর নির্বাহী প্রকৌশলী বদলি
• ইনচার্জ জাহাঙ্গীরের চাঁদার টাকা রফাদফার ভিডিও ভাইরাল
• তুষারের কব্জায় স্কুল-কলেজের কয়েক কোটি টাকার জমি
• বান্দরবানে কুকি-চিনের নারী শাখার সমন্বয়কসহ দুইজন কারাগারে
• ১২ সেকেন্ডে ৩শ’ কোটি টাকা চুরি!
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved