[ অনলাইন ] 07/05/2024 |
|
|
|
কিশোরকে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় চার পুলিশ প্রত্যাহার |
|
|
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এক কিশোরকে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল রবিবার রাত ৮টার দিকে তাদের রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্র থেকে রাজশাহী পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।
প্রত্যাহার হওয়া চার সদস্যরা হলেন, প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল মো. রেজাউল করিম ও মিলন হোসেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম গ্রাম থেকে ওই কিশোরকে তুলে নিয়ে যান কয়েকজন। ওই কিশোরকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার বাবা মো. মুর্ত্তজা একজন কাপড় ব্যবসায়ী।
ভুক্তভোগী কিশোর ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে ভুক্তভোগী কিশোর তার বাবার কাপড়ের দোকান বন্ধ করে। পরে সে তার দুই বন্ধুর সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন তাদের সামনে আসেন। তারা পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের তিনজনের মোবাইল কেড়ে নেন। এরপর তারা জোর করে ওই কিশোরকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে চলে যান। রাত ৯টার দিকে তার হাতে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর তাকে প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পাশে পদ্মা নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
এ সময় তারা তাকে বলেন, ‘তোর বাপকে ফোন দিয়ে টাকা আনতে বল, নইলে মাদক মামলায় চালান দিয়ে দিব।’ এই সময় কিশোরটির মোবাইলে তার মা-বাবার মোবাইল থেকে বারবার ফোন আসছিল। কিন্তু তারা তাকে তার মা-বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেয়নি। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বসন্তপুরে ফাঁকা রাস্তার পাশে সোহানুরকে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে ওই কিশোর একা গোগ্রাম বাজারে চলে যায়।
ভুক্তভোগী কিশোর জানায়, তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়েছে। তবে তাদের পরনে পুলিশের কোনো পোশাক ছিল না। তাদের একজনের হাতে থাকা হাতকড়া তাকে পরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তারা তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে গাড়ি এনে থানায় নিয়ে চালান দিয়ে দেবেন বলেও তারা তাকে হুমকি দেন। সে ভয় না পেয়ে তাদের সঙ্গে থানায় যেতে চায়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
কিশোরটি আরও জানায়, ওই চারজন তার মোবাইলে থাকা বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে পিন নম্বর নিয়ে তার সামনেই তিন হাজারের মতো টাকা তুলে নেন। তাকে ছেড়ে দেওয়ার আগেই দুজন পুলিশ সদস্য সেখান থেকে চলে যান। বাকি দুজন তাকে ফাঁকা রাস্তায় নামিয়ে দেন।
এরইমধ্যে ভুক্তভোগীকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এই অবস্থায় তার পরিবার তাকে খুঁজতে থাকে। থানা-পুলিশকেও ফোন করা হয়। এ সময় এএসআই আনোয়ারুলকে সাদা পোশাকে গোগ্রাম বাজারে দেখতে পান স্থানীয়রা। স্থানীয় লোকজন তার কাছে ভুক্তভোগীর বিষয়ে জানতে চান।
একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে অবরুদ্ধ করেন। পরে খবর পেয়ে প্রেমতলী তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসমান গণি অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়েই স্থানীয় লোকজনকে লাঠিপেটা করেন তিনি। এতে সাত-আটজন আহত হন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন লোকজন। পরে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আবদুল মতিন ও গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এএসআই আনোয়ারুলকে নিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে রাজশাহী পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত চারজনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|