বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্র হয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পর্যবেক্ষণ করে ‘আঙুল
কাটা গ্রুপ’। কিছুদিন পর এসে সুযোগ বুঝে মাত্র ১০ মিনিটে চুরি করে সটকে পড়ে
তারা। এ চক্রের মূল টার্গেট সোনা বা মোবাইল ফোনের দোকান। বগুড়া জেলা পুলিশ
অভিযান চালিয়ে এমনই এক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ
থেকে ১৭ ভরি সোনাসহ চুরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশ
সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- কুমিল্লার মুরাদনগরের ‘আঙুল কাটা গ্রুপ’ এর
প্রধান রুবেল ওরফে আঙুল কাটা রুবেল (২৭), একই জেলার দক্ষিণ সদরের শাহজালাল
(৪৬) ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ইব্রাহিম নয়ন (৩০)। তাদের বিরুদ্ধে সারাদেশের
বিভিন্ন থানায় ২ থেকে ১২টি চুরির মামলা রয়েছে।
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, গত ২০ এপ্রিল বগুড়ার
নিউমার্কেটে আল-তৌফিক জুয়েলার্সে চুরি হয়। চোরেরা দোকানের শাটারের তালা
কেটে ১১০ ভরি সোনা চুরি করে। মাত্র ১০ মিনিটে এ কাজ শেষ করে তারা। পরদিন
সদর থানায় মামলা হয়। এরপর দলের সদস্যদের ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ। আশপাশের
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও
নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের তথ্যের বরাতে পুলিশ সুপার বলেন, তারা একটি সংঘবদ্ধ
চোর চক্রের সদস্য। আঙুল কাটা রুবেলের নামে দলটির নামকরণ হয়েছে। এ চক্রে ১২
জন কাজ করে। তারা ক্রেতা সেজে কোন দোকানে চুরি করবে, তা ঠিক করে পরিকল্পনা
আঁটে। কয়েক দিন পর সুযোগ বুঝে চুরি করে সটকে পড়ে। গ্রেপ্তার নয়নের দায়িত্ব
ছিল দোকানের তালা কাটা। একেকজন একেক ভূমিকা পালন করে। চুরি করা সোনা নিয়ে
যাওয়ার সময় তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে।
চক্রটির প্রধান রুবেলের নির্দেশে নাটোরের মাদ্রাসা মোড়ে একত্র হয়ে তারা
কুমিল্লায় গিয়ে চুরির সামগ্রী ভাগ করে জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন,
রুবেলের ভাগে পড়ে ১৭ ভরি সোনা। সেগুলো কুমিল্লার সোয়াগাজী বাজারে
বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সের মালিক শাহজালালের কাছে বিক্রি করে। গ্রেপ্তার এড়াতে
তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে।
পুলিশ সুপার বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় প্রথমে নয়নকে চট্টগ্রামের
পটিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে আঙুল কাটা রুবেল ও
শাজাহালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চুরির কথা
স্বীকার করেছে। তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে
জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত, তা জানা যাবে।