চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মিল্টন
সামাদ্দার তাঁর বিরুদ্ধে আনা অধিকাংশ অভিযোগই স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন
অর-রশীদ। তিনি বলেন, তিনটি মামলার মধ্যে দুটিতে দুই দফা রিমান্ডে মিল্টন
ভুয়া মৃত্যু সনদ তৈরি করে লাশ দাফনের বিষয়টিও স্বীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান মোহাম্মদ হারুন অর-রশীদ।
তিনি বলেন, মিল্টন সাত দিনের রিমান্ডে ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অধিকাংশ
অভিযোগ স্বীকার করেছেন। মিল্টন জানান, চিকিৎসকের সই জাল করে নিজেই মৃত্যু
সনদ লিখে দিতেন। তা ছাড়া তাঁর আশ্রমে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, তাঁর এসব কর্মকাণ্ডের মূল শক্তি ছিল ভিআইপিদের
সঙ্গে ওঠাবসা। এ জন্য তিনি মনে করতেন কেউ তাঁকে কিছু করতে পারবে না। আরও
তদন্তের জন্য তাঁর স্ত্রী মিতু সমাদ্দারকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
ডিবি কর্মকর্তা জানান, মিল্টন স্বীকার করেছেন, মানুষের সহানুভূতি ও টাকা
পাওয়ার জন্যই লাশের সংখ্যা বাড়িয়ে বলে ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে দিতেন।
তবে নিজ মুখে স্বীকার করা ১৩৫টি লাশ কোথায় দাফন করেছেন, তা বলতে পারেননি।
অনাথ-অসহায়দের ভিডিও ফেসবুকে দিয়ে মানুষের বিবেকে নাড়া দেওয়ার চেষ্টা
করতেন। মানুষজনও তাঁকে বিশ্বাস করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা পাঠাতেন। কিন্তু
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আশ্রমে কোনো চিকিৎসক তিনি রাখেননি। নিজেই বিভিন্ন
অপারেশন করতেন। তখন মানুষজন আর্তনাদ করলে তিনি পৈশাচিক আনন্দ পেতেন।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, কিছু তথ্য জানার বাকি আছে। তাঁকে আবারও রিমান্ডে আনব।
বৃহস্পতিবার মানবপাচার আইনের মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টনকে
আদালতে তোলা হয়। আদালত তাঁকে আবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ১ মে রাতে মিল্টনকে মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরে তিনটি মামলা
হয় তাঁর নামে। দুই মামলায় রিমান্ড চলা অবস্থায় স্ত্রী মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদ
করেন গোয়েন্দারা। তবে তিনি স্বামীর কৃতকর্মের দায় অস্বীকার করেন।