[ অনলাইন ] 25/04/2024
 
সামুদ্রিক মাছ আমদানির আড়ালে কোটি টাকা পাচার ভারতে
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণা ও আন্ডার ইনভয়েসিং এ সামুদ্রিক মাছ আমদানি করে হুন্ডির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাচার করা হচ্ছে ভারতে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিআইসেলের তদন্তের উদ্যোগে এই তথ্য উঠে এসেছে।

কাস্টমস সুত্র জানায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মোস্তফা কর্পোরেশন ভারত থকে প্রতিকেজি আন্ডার ইনভয়েসিং করে ০.২০ ডলারে সামুদ্রিক মাছ আমদানি করছে। অথচ একই বন্দর দিয়ে অন্যান্য আমদানিকারকরা প্রতিকেজি মাছ ০.৩০ থেকে ০.৫০ ডলারে মাছ আমাদনি করছে। রুপালী ব্যাংক ঢাকা, রমনা শাখায় আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে এসব এলসি খোলা হচ্ছে।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মোস্তফা কর্পোরেশনের এমনি একটি পণ্য চালান আমদানি করেন যার এলসি নম্বর ০০৫৬ তাং ২৫ ফেব্রুয়ারী,২০ ২৪। কাস্টমস বি/ই নম্বর সি-১৮০৩১ তাং২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ পণ্য চালানে মোট -৩৭. ৭৭৭ কেজি মাছ আমদানি করা হয়। পণ্য চালানটি খালাশের দায়িত্বে ছিল, সিএন্ডএফ জিরো প্লাস। সিএন্ডএফ এজেন্ট রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আন্ডার ইনভয়েসিং করে মাছ আমদানি করছে।

সিএন্ডএফ এজেন্ট জিরো প্লাস আমদানিকারক আরিফ ট্রেডিং এর মাধ্যমে গত ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ তারিখে ৯৩ হাজার ২৬২ কেজি সামুদ্রিক মাছ আমদানি করেন। সেখানেও প্রতিকেজি ০.২০ সেন্টে ঘোষণা দেওয়া হয়। মিথ্যা ঘোষণা ও আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে আমদানি করা মাছে ১৮ টন অতিরিক্ত মাছ আটক করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

পরে আমদানিকারকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে মাছের চালানটি খালাশ দেওয়া হয়। আন্ডার ইনভয়েস ও মিথ্যা ঘোষাণায় আমদানি করা মাছে প্রতি কেজি ০.২০ সেন্ট ঘোষণা দিলেও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিকেজি মাছ ০.৯০ কেজি ডলারে শুল্কায়ন করে সরকারের ন্যায্য রাজস্ব আদায় করছেন। 

বেনাপোল বন্দর দিয়ে অন্যান্য আমদানিকারকরা প্রতিকেজি মাছ ০.৪০ থেকে ০.৫০ ডলারে এলসি করলেও সিএন্ডএফ এজেন্ট জিরো প্লাস প্রতিকেজি ০.২০ ডলারেই এলসি করে যাচ্ছেন। যা মানি লন্ডারিং এর আওতায় বড় ধরনের অপরাধ। অন্যদিকে জিরো প্লাস সিএন্ডএফ এজেন্ট নিজেও একজন আমদানিকারক।

আমদানিকারক জিরো প্লাস ২১/৪/২৪ তারিখ প্রতিকেজি মাছ ০.৩০ ডলারে এলসি করে বন্দর থেকে খালাশ গ্রহন করছেন। যার এলসি নং ০০৩৬ তে তিনি ৮৪ হাজার ৩৬০ কেজি সামুদ্রিক মাছ আমদানি করেন। যার কাস্টমস বি/ই নম্বর ৩৪৪৩০, পন্য চালানটি খালাশের দায়িত্বে ছিলেন সিএন্ডএফ এজেন্ট জিরো প্লাস। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দ্রুত জিরো প্লাসের লাইসেন্স বাতিল করতে যাচ্ছেন।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আব্দুল হাকিম বলেন, ‘আন্ডার ইনভয়েসিং ও মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানিতে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। মিথ্যা ঘোষণায় অতিরিক্ত মাছ আমদানি করলেই তা আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে প্রতিকেজি মাছ মাত্র ০.২০ ডলারে এলসি করে বড় ধরনের মানি লন্ডারিং করা হচ্ছে, বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিআইসেল ও শুল্ক গোয়েন্দার মাধ্যমে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অন্যান্য আমদানিকারকরা আমাকে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’