[ Online ] 29/04/2024 |
|
|
|
ডলার সংকট ঠেকাতে এবার অফশোর ব্যাংকিংয়ে তোড়জোড়!
|
|
|
ডলার সংকট ঠেকাতে এবার অফশোর ব্যাংকিংয়ে জোর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রোববার (২৮ এপ্রিল) এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সাথে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন।
অফশোর ব্যাংকিং হলো ব্যাংকের ভেতরে পৃথক ব্যাংকিং সেবা। প্রচলিত ব্যাংকিং বা শাখার কার্যক্রমের চেয়ে ভিন্ন অফশোর ব্যাংকিং। কারণ এ জাতীয় কার্যক্রমে আমানত গ্রহণ ও ঋণ দেওয়ার দুই কার্যক্রমই বৈদেশিক উৎস থেকে আসে এবং বিদেশি গ্রাহকদের দেওয়া হয়। বিদেশি কোম্পানিকে ঋণ প্রদান এবং বিদেশি উৎস থেকে আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবসা হয় অফশোর ব্যাংকিংয়ে।
সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশি যারা বিদেশে আছে তারা যেন তাদের ফরেন কারেন্সি বাংলাদেশে এনে সার্ভ করে। আমরাও ভালো একটা ইন্টারেস্ট রেট দেব। এটা একটা ভালো উদ্যোগ। গত ৫-৭ বছরে ভারত এটাতে খুব সাকসেসফুলি করেছে। ফিলিপাইন থাইল্যান্ড অনেক দেশ এটাতে বেশ ভালো করেছে। আমরাও আরম্ভ করেছি। বিশেষ করে একটা অভিও অ্যাক্ট পাস করার পরে আমরা মনে করি এই প্রোডাক্টটা অনেক অ্যাট্রাক্টিভ হয়ে যাবে। এখন আমাদের যেটা প্রয়োজন সব ব্যাংক এটা ভালোমত বুঝে এর প্রোডাক্ট তৈরি, মার্কেটিং এবং বিভিন্নভাবে এটাকে প্রমোশন করা দরকার। সেটা কীভাবে কী হবে সে বিষয়ে আজকে আলোচনা হয়েছে।’
‘প্রথমে আমাদের যখন বলা হচ্ছিল বাংলাদেশে এই উদ্যোগটা চালু করব তখন আমরাই চেয়েছিলাম ৩-৪ মাস আগে। এটা হলে যে সমস্ত আইন তৈরি করতে হবে, প্রোডাক্টটা আমরা যেন সুন্দর করে চালু করতে পারি, বিশেষ করে যে অ্যাক্টটা দরকার ছিল, যে ট্যাক্স ফ্রি হবে, এটা সুন্দর করে গভর্নর আমাদের দিয়ে দিয়েছেন। এটা এখন মার্কেটিং দরকার।’
এরই মধ্যে কোনো কোনো ব্যাংক কাজ শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক ব্যাংক প্রমোশন আরম্ভ করে দিয়েছে। আমার মনে হয় এই বছরের শেষের মধ্যে বিদেশে আমাদের যে ডলার সেভিংস এটা একটা অন্য ক্লায়েন সাইট। রেমিট্যান্স যাদের কাছ থেকে আনি এরা তারা না। এরা হচ্ছে তারা যারা একটু আপার লেভেলের, ডাক্টার, ইঞ্জিনিয়ার, লয়ার যারা প্রফেশনাল তাদের কাছ থেকে আমরা (ডলার আনার চেষ্টা করছি)। এবং বাংলাদেশের এখন অনেকেই অন্য দেশের নাগরিক। তাদের কাছ থেকেও আমরা আনব। কারণ আমরা তো ভালো ইন্টারেস্ট রেট দিচ্ছি। এদিকে সরকারের পুরো গ্যারান্টি দেওয়া হচ্ছে। আবার কোনো ট্যাক্স চার্জ করা হবে না। আমরা যদি বেটার ইন্টারেস্ট রেট দিতে পারি, ভালো সার্ভিস দিতে পারি, নিশ্চয় আমরাও অন্যান্য দেশে বাংলাদেশের যে দেড় কোটির বেশি বিদেশে থাকে তাদের ইনভল্ব করতে পারব। এর মধ্যে সিটি ব্যাংক ভালো সাফল্য পেয়েছে। প্রায় ৩০-৪০ মিলিয়ন ডলার এসেছে। এটা সবে শুরু হচ্ছে। ধীরে ধীরে সবাই চালু করবে।’
চলমান মার্জার প্রক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চার-পাঁচটা ব্যাংক নিজেরাই মার্জারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা সময়মতো তাদের কাজ করতে থাকবে। আমার মনে হয় এটা নিয়ে এত হইচই করার প্রয়োজন নেই। এটা ধীরস্থিরভাবে হবে। যেসব ব্যাংক করতে চাচ্ছে কি চাচ্ছে না এটা সেইসব ব্যাংকের জন্য প্রয়োজ্য। ব্যাংক একীভূত সারা পৃথিবীজুড়ে হয়। এটা অস্বাভাবিক কিছু না। আমাদের দেশেও এগুলো আস্তে-ধীরে হবে। এটা নিয়ে এত চিন্তা করা কিছু নাই।’
এর আগে গেল ২২ এপ্রিল অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের অর্জিত মুনাফা বা সুদের ওপর কোনো কর দিতে হবে না মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। আয়কর আইন ২০২৩-এর ধারা ৭৬ এর উপ-ধারার (১) ক্ষমতাবলে এই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্য কোনো আইনে কোনো প্রকার কর অব্যাহতি প্রদান করা হলে সেই কর অব্যাহতি ততক্ষণ পর্যন্ত কার্যকর হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না এনবিআর সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অব্যাহতিসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
তারও আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ অফশোর ব্যাংকিং আইন ২০২৪ এর খসড়া প্রস্তুত করে। তবে খসড়া বিধানে স্টেকহোল্ডার হিসেবে এনবিআরের মতামত অগ্রাহ্য করা হয়েছিল।
অফশোর ব্যাংকিংয়ের খসড়া আইনের দফা ১৩(ক)-তে বলা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসায় অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট কর্তৃক অর্জিত সুদ বা মুনাফার ওপর আয়কর বা অন্য কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কর আরোপ করা যাবে না। |
|