নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সময় ২০ মিলিয়ন ডলারের জালিয়াতি লেনদেন রুখে দিয়ে সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় শ্রীলঙ্কার প্যান এশিয়া ব্যাংকিং করপোরেশনের (পিএবিসি) কর্মকর্তাদের বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বাহারুল আলম, বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার, বাংলাদেশ ব্যাংকের চারজন ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এবং প্যান এশিয়া ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ২০১৬ সালের রিজার্ভ চুরির ঘটনার সময় শ্রীলঙ্কার ব্যাংক কর্মকর্তারা যে সতর্কতা ও পেশাদারত্ব দেখিয়েছেন, তা আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক খাতের জন্য এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তাদের ওই ভূমিকা শুধু বাংলাদেশকেই নয়, গোটা বিশ্ব ব্যাংকিং ব্যবস্থাকেই এক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, এই সম্মাননা কেবল কৃতজ্ঞতা নয়, বরং সততা, দায়িত্ববোধ এবং আন্তঃদেশীয় সহযোগিতার প্রতীক। শ্রীলঙ্কার ব্যাংকারদের সাহসী সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, আর্থিক খাতে সাইবার সুরক্ষা, নিয়ন্ত্রণ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষায় অবদানও তুলে ধরা হয়।
সম্মাননা অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক অপরাধ দমন, প্রযুক্তিনির্ভর তদারকি এবং ভবিষ্যতে আরও নিবিড় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ফেডারেল ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। বিভিন্ন সময় ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়। কিন্তু এখনও ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।