Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
প্রাইজবন্ডের সার্বিক লেনদেনে ঘাটতি [ অনলাইন ] 19/07/2025
নতুন বিক্রির চেয়ে ভাঙানোর হার বেশি
প্রাইজবন্ডের সার্বিক লেনদেনে ঘাটতি
সরকারি সঞ্চয়ী উপকরণ প্রাইজবন্ডের সার্বিক লেনদেনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বছরে গড়ে যে পরিমাণ প্রাইজবন্ড নতুন বিক্রি হয়, সেই অর্থ দিয়ে আগে বিক্রি করা বন্ডের দায় পরিশোধ করা যাচ্ছে না। ফলে সরকারের অন্য হিসাব থেকে ঋণ নিয়ে প্রাইজবন্ডে বিনিয়োগকারীদের দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে। নতুন বিক্রি ও আগের বিক্রি করা প্রাইজবন্ড ভাঙানোর মধ্যকার পার্থক্য দিন দিন বাড়ছে। লটারিতে অংশ নেওয়ার সময়ে এতে বিনিয়োগ বাড়ছে। আবার লটারি সম্পন্ন হলে বিক্রি বেড়ে যাচ্ছে। অনেকেই ধারণা করছেন, একটি মহল লটারির আগে প্রাইজবন্ড বেশি মাত্রায় কিনছেন। লটারি সম্পন্ন হলে তা আবার বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে প্রাইজবন্ডে দীর্ঘমেয়াদি বা স্থায়ী বিনিয়োগ গড়ে উঠছে না।

সূত্র জানায়, প্রাইজবন্ড একটি সঞ্চয়ী উপকরণ হিসাবে বাজারে ছাড়া হয়। লক্ষ্য ছিল মানুষের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সঞ্চয়ী মনোভাব গড়ে তোলা। প্রথম দিকে এটিতে বেশ ভালো সাড়া ছিল। এখন এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সঞ্চয়ী মনোভাব কম। এতে কোনো মুনাফা দেওয়া হয় না। তিন মাস পর পর লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে গ্রাহকদের পুরস্কার দেওয়া হয়। আবার পুরস্কার পাওয়া বা না পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা এবং পুরস্কারের অর্থ উত্তোলন কিছুটা জটিল প্রক্রিয়া। আর সরকারি খাতের অন্যান্য সঞ্চয়পত্রগুলোতে মেয়াদ শেষে নির্ধারিত হারে মুনাফা পাওয়া যায়। বর্তমানে মুনাফা ব্যাংক হিসাবে চলে যায়। ফলে গ্রাহক ঘরে বসেই তার মুনাফা পাচ্ছে। আর প্রাইজবন্ডে সেই সুবিধা পাচ্ছে না।

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রাইজবন্ডে গ্রাহকদের বিনিয়োগের স্থিতি ছিল ১৭ কেটি ২০ লাখ টাকা। ওই মাসে গ্রাহকরা যে নতুন প্রাইজবন্ড কিনেছেন ও আগের কেনা বন্ড ভাঙিয়ে যে টাকা তুলেছেন এই দুটির মধ্যে ঘাটতি ছিল ২০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই জানুয়ারিতে সার্বিকভাবে ঘাটতি ছিল ২২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে স্থিতি ছিল ১০ কোটি ১০ লাখ টাকা। একই সময়ে নতুন বিক্রি ও আগের দায় পরিশোধের মধ্যে ঘাটতি ছিল ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই জানুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ২০ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, প্রাইজবন্ড নতুন বিক্রি ও আগে বিক্রি করা বন্ডের দায় শোধের মধ্যকার ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে। এ খাতে যে ঘাটতি হচ্ছে তা সরকারের অন্য হিসাব থেকে ঋণ নিয়ে দায় শোধ করা হচ্ছে। আবার কখনো উদ্বৃত্ত হচ্ছে।

বছরে চার দফা প্রাইজবন্ডের লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো হচ্ছে ৩১ জানুয়ারি, ৩০ এপ্রিল, ৩১ জুলাই ও ৩১ অক্টোবর। ড্র তারিখের দুই মাস আগে গ্রাহক যেসব প্রাইজবন্ড কিনবেন সেগুলোই কেবল নিকটবর্তী লটারির ড্রতে অন্তর্ভুক্ত হবে। অন্যগুলো হবে না। এ কারণে যে সময় পর্যন্ত প্রাইজবন্ড কিনলে লটারিতে অংশ নেওয়া যাবে, সেই সময় পর্যন্ত বিক্রি বাড়ে। আবার লটারিতে অংশগ্রহণের সময় শেষ হয়ে গেলেই বিক্রি কমে যায়।

প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রাইজবন্ডে বিনিয়োগের স্থিতি ছিল ৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ওই বছরের জানুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ঘাটতি ছিল ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

২০১৯ সালের জানুয়ারিতে স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ওই বছরের জানুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে সার্বিক লেনদেনে ঘাটতি ছিল ১৫ কোটি টাকা।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে স্থিতি ছিল ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ওই বছরের জানুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ১১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

আগে বাজারে বিভিন্ন মানের প্রাইজবন্ড পাওয়া যেত। এখন শুধু ১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ড পাওয়া যায়। আগে প্রাইজবন্ডে বিনিয়োগ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসাবে দেওয়ার জন্য বেশ প্রচার চালানো হতো। এখন তেমন প্রচার নেই। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো অফিসগুলোতে এটি বিক্রি হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ডাকঘরেও এটি বিক্রির কথা থাকলেও সব ব্যাংক ও ডাকঘরে পাওয়া যায় না।

জানা গেছে, আগে প্রাইজবন্ডে গ্রাহক বেশি ছিল। ফলে এটি বিক্রি করে সরকারের কাছ থেকে ভালো কমিশন পেত। এখন গ্রাহক কম। ফলে কমিশনও পাওয়া কমেছে। তবে ড্র অনুষ্ঠিত হওয়ার দুই মাস আগে কিছু দিন এর বিক্রি বাড়ে। ড্রয়ের সময় দুই মাসের কম হলে তখন আর ব্যাংক থেকে নতুন প্রাইজবন্ড বিক্রি কম হয়। তখন অনেকে কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন, কেউ আগের কেনা বন্ড নিয়ে এলে সেগুলো নিজেরাই কিনে নেন। কারণ সেগুলো নিকটবর্তী ড্রতে অংশ নিতে পারবে।

প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, সব মাসে সার্বিক লেনদেনে ঘাটতি হচ্ছে না। বিশেষ করে লটারিতে অংশ নেওয়ার দুই মাসের আগের মাসে উদ্বৃত্ত থাকছে। বাকি সময়গুলোতে ঘাটতি থাকছে।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই ফেব্রুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে স্থিতি ছিল ১৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ওই মাসে ঘাটতি ছিল ১৩ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই জানুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে স্থিতি ছিল ১৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ওই মাসে ঘাটতি ছিল ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই জানুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে স্থিতি ছিল ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ওই মাসে ঘাটতি ছিল ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই জানুয়ারিতে ঘাটতি ছিল ১৪ কোটি ১০ লাখ টাকা।

এদিকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা, নভেম্বরে ২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা, আগস্টে ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা উদ্বৃত্ত ছিল। ওই বছরের অক্টোবরে ১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা, জুলাই ২০ কোটি ২০ লাখ টাকা, জুনে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ঘাটতি ছিল। 
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• ডলারের দাম কেন কমতে দিতে চায় না বাংলাদেশ ব্যাংক
• ব্যাংকের বুথ থেকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ নিরাপত্তারক্ষী গ্রেফতার
• মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও পেনশন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা
• আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ
• মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু
• মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও পেনশন কর্তৃপক্ষের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর
• বিমা খাতে আসছে কঠোর সংস্কার
• ব্যাংকের বাইরে নগদ অর্থ আবার বাড়ছে
• মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মুনাফা কমেছে ৮%
• সমঝোতা হয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও পেনশন কর্তৃপক্ষের মধ্যে
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved