[ অনলাইন ] 13/05/2025 |
|
|
অধ্যাদেশ জারি |
এনবিআর ভেঙে হলো দুই বিভাগ |
 |
|
আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতামত উপেক্ষা করে সংশোধন ছাড়াই বহুল আলোচিত রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ সোমবার রাতে জারি করা হয়েছে। জারিকৃত অধ্যাদেশে শুধু রাজস্বনীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক পদগুলোতে অ্যাডমিন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে।
সোমবার গেজেট জারির পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আয়কর ও কাস্টমস কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যুগান্তরকে বলেন, এই অধ্যাদেশ জারির মধ্য দিয়ে কর ও কাস্টমস ক্যাডারের অধিকাংশ দাবি বাস্তবায়িত হয়েছে। এছাড়া এ অধ্যাদেশের আরেকটি ভালো দিক হচ্ছে-কর ক্যাডার কর্মকর্তারা শাসিত হবে কর ক্যাডার দ্বারা এবং শুল্ক ক্যাডার কর্মকর্তারা শুল্ক ক্যাডার দিয়ে শাসিত হবেন।
এর আগে এ সংক্রান্ত খসড়ায় বলা হয়েছিল, রাজস্বনীতি বিভাগ কর আইন প্রয়োগ ও কর আদায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ পরিবীক্ষণ করবে। আর রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রশাসনিক অনুবিভাগের বিভিন্ন পদ অ্যাডমিন ক্যাডার ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মরত-কর্মচারীদের মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
কিন্তু জারিকৃত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, রাজস্বনীতি বিভাগ কর আইন প্রয়োগ এবং কর আহরণ পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবে। অর্থাৎ ‘পরিবীক্ষণ’ শব্দের পরিবর্তে ‘মূল্যায়ন’ শব্দটি যোগ করা হয়েছে। আর রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রশাসনিক অনুবিভাগের বিভিন্ন পদ অ্যাডমিন ক্যাডারের পাশাপাশি আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তা ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মরত কর্মচারীদের মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জনবল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে ন্যস্ত হবে। এই জনবল থেকে প্রয়োজনীয় জনবল রাজস্বনীতি বিভাগে পদায়ন করা যাবে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত হয়ে তার জনবল রাজস্বনীতি বিভাগে ন্যস্ত হবে।
এদিকে এনবিআর বিলুপ্তির প্রতিবাদে সোমবার দিনভর আগারগাঁও রাজস্ব ভবনে বিক্ষোভ করেছেন পাঁচ শতাধিক আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং ঢাকার বিভিন্ন কর অঞ্চল, কাস্টম হাউজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় বৈঠক করেন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে রাজস্ব আদায় কার্যক্রম।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মঙ্গলবার বিকাল ৩টা থেকে রাজস্ব ভবনের সামনে বিসিএস আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তা, নন-ক্যাডার কর্মকর্তা, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সমন্বয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তারা বলছেন, পৃথিবীর সব দেশের নিজস্ব রাজস্ব আদায়কারী সংস্থা রয়েছে। অথচ কোনো ধরনের সমীক্ষা ছাড়াই এনবিআর বিলুপ্ত করতে অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে অংশীজন বা ব্যবসায়-বাণিজ্যের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা নিয়ে কোনো আলোচনাই করা হয়নি। একটি বিশেষ ক্যাডার নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে এক তরফাভাবে খসড়া অধ্যাদেশ তৈরি করেছে। এক্ষেত্রে কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের মতামত তো দূরের কথা, অর্থনৈতিক পরিস্থিতিবিষয়ক শ্বেতপত্র কমিটি বা এনবিআর সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশও আমলে নেওয়া হয়নি। খসড়া অধ্যাদেশে নানা রকমের অসঙ্গতি আছে। এসব ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত না করে এবং সমীক্ষা ছাড়া এনবিআর বিলুপ্ত করলে রাজস্ব আদায় কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হবে। এতে দেশের অর্থনীতি ধসে পড়তে পারে।
এর আগে কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ এর খসড়া কর্মকর্তাদের মতামত প্রতিফলিত হয়নি। বিভাগ দুটিতে কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের জন্য পদ সংরক্ষিত না রেখে রাজস্বের কাজে অভিজ্ঞতা নেই এমন কর্মকর্তা পদায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে একদিকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কাজে অভিজ্ঞ নয় এমন কর্মকর্তা পদায়নের মাধ্যমে রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা, গতিশীলতা এবং কার্যকারিতা বিঘ্নিত হবে, অন্যদিকে এনবিআরে কর্মরত দুটি ক্যাডারের কাজের ক্ষেত্র ও পদোন্নতির সুযোগ মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হবে। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
 |
|