Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
রেমিটেন্স প্রবাহ কমছে [ প্রথম পাতা ] 04/04/2020
রেমিটেন্স প্রবাহ কমছে
করোনায় কর্মহীন বহু প্রবাসী আতঙ্কে টাকা পাঠাতে পারছেন না অনেকেই করণীয় নির্ধারণে কাল বৈঠক
রহিম শেখ:

মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়া নোভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে মন্দার ঘণ্টা বাজছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোসহ বৈশ্বিক অর্থনীতির সব দেশেরই উৎপাদন খাত এখন অনেকটাই বন্ধ। বিশ্বের প্রায় ১০০টিরও বেশি দেশে লকডাউন, কারফিউ জারি কিংবা জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। কাজ বন্ধ রয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের। সর্বশেষ তথ্য মতে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অন্তত ৬৫ জন বাংলাদেশী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা আতঙ্কে সম্প্রতি কয়েক লাখ প্রবাসী বাংলাদেশে এসেছেন। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের সরকার প্রবাসীদের নিজ দেশে ফেরানোর তাগিদ দিচ্ছে। ইতোমধ্যে কর্মহীন হয়ে গেছেন বহু প্রবাসী। যারা এখনও প্রবাসে আছেন আতঙ্কে টাকা পাঠাতে পারছেন না দেশে। বন্ধ রয়েছে বহু দেশের রেমিটেন্স হাউস ও ব্যাংকিং সেবা। দেশের অর্থনৈতিক সূচকগুলোর মধ্যে এত দিন রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় ছাড়া সবই ছিল নেতিবাচক ধারায়। ইতিবাচক থাকা সেই প্রবাসী আয়েও এবার হোঁচট লেগেছে। করোনায় বিধ্বস্ত মার্চ মাসে রেমিটেন্স এসেছে মাত্র ১২৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বনিম্ন। এসব কারণে ভবিষ্যতে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আগামী ৫ এপ্রিল বৈঠকে বসছে সরকার। এতে প্রবাসীকল্যাণ, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর প্রতিনিধিরা থাকবেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, বর্তমানে এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছেন। বর্তমানে সর্বাধিক ২০ লাখ ৮৪ হাজার বাংলাদেশী রয়েছেন সৌদি আরবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৩ লাখ ৭০ হাজার এবং ওমান ও মালয়েশিয়ায় আছেন ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশী। এরপর কাতার, কুয়েত, সিঙ্গাপুর ও বাহরাইন। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সর্বাধিক বাংলাদেশী আছেন ইতালিতে। প্রাণঘাতী করোনার কারণে দেশগুলোয় সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের অধিকাংশই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে যারা রোজ বা সপ্তাহের ভিত্তিতে কর্মরত ছিলেন, তারা পড়েছেন মহাসঙ্কটে। আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন প্রবাসের ব্যবসায়ীরাও। অনেকের নিয়োগকর্তা বেতন, খাদ্য, বাসস্থান, ওষুধ ইত্যাদি দিলেও যাদের নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তা নেই, বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছেন, তাদের আয় একেবারেই নেই। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় অধিকাংশ প্রবাসী কর্মহীন হয়ে পড়ার কারণে বেতন পাবেন না। বাংলাদেশের রেমিটেন্সের মূল উৎস মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকরা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের ভয়ে তারা ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না। দিন যত যাচ্ছে, তাদের দুশ্চিন্তা ততই বাড়ছে। কয়েকটি দেশে যারা বৈধ ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কাজ করছেন, তাদের অর্ধেক বেতন দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। আর যাদের ওয়ার্ক পারমিট নেই, তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয় এবং তাদের সংখ্যাও কম নয়। এর বাইরে করোনা আতঙ্কে অনেক প্রবাসী ইতোমধ্যে দেশে ফিরেছেন। পরিস্থিতির উন্নতি হলে দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পরও অনেকে যে কর্মহীন হয়ে পড়বেন, সে আভাস মিলছে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে। ফলে আগামীতে রেমিটেন্স আরও কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলার, যা জানুয়ারিতে ৫ কোটি ডলার কমে নেমে যায় ১৬৪ কোটি ডলারে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় এক লাফে ১৯ কোটি ডলার কমে ১৪৫ কোটি ডলারে আসে। করোনায় বিধ্বস্ত মার্চ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ১২৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। বিশ্লেষকদের মতে, রেমিটেন্স কমে গেলে অর্থনীতিতে আরও চাপ তৈরি হবে। কেননা, কয়েক মাস ধরে রফতানি কমে গেছে। আমদানির পরিমাণও বেশ কিছুদিন ধরে কমছে। এমন পরিস্থিতিতে আশা জাগাচ্ছিল প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো রেমিটেন্স। বিশেষ করে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণার ফলে রেমিটেন্সে প্রবৃদ্ধি অর্থনীতিতে আশার আলো দেখায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রবাসী আয় আহরণের শীর্ষ ১৫টি উৎস দেশ হলো সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার, ইতালি, বাহরাইন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া ও জর্দান। এর মধ্যে সৌদি আরব করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। মসজিদে নামাজ আদায় সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাইয়ে বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১৫ দিন লকডাউন বা অবরুদ্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই দেশে ওয়ালমার্টসহ বড় বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান তাদের বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ কিংবা কাজের সময়সীমা কমানোর ঘোষণা করেছে। মালয়েশিয়া করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জরুরী অবস্থা জারি করেছে। সেখানে সম্প্রতি রেমিটেন্স হাউস ও ব্যাংকগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আর ইতালিতে মৃত্যুর মিছিলের সঙ্গে লকডাউন থাকবে পুরো এপ্রিল জুড়ে। বন্ধ হয়ে গেছে দেশটির রেমিটেন্স হাউস ও ব্যাংক।

জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, লকডাউনের কারণে চাইলেও অনেকে টাকা পাঠাতে পারছেন না। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবাসেই অনেকের টাকা দরকার, যে কারণে তারা সঞ্চয় করে রাখছেন। হোটেলসহ সেবা খাতে যারা কাজ করতেন, তাদের আয় কমে গেছে। ফলে রেমিটেন্স প্রবাহে গত কয়েক দিনে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ পরিস্থিতি মেনে নিয়েই সামনের দিকে এগোতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশ এরই মধ্যে নানা প্রণোদনা ও বেইল আউট প্যাকেজ দিয়েছে। ফলে আগামীতে রেমিটেন্স কমলেও তা চলমান থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারিতে সৌদি আরব থেকে ৩২ কোটি ডলার এসেছিল, গত মাসে তা কমে হয়েছে ৩০ কোটি ডলার। একই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে প্রবাসী আয় এসেছে যথাক্রমে ২১ কোটি ও ১৯ কোটি ডলার। মালয়েশিয়া থেকে আয় ১২ কোটি থেকে কমে ১০ কোটি ডলার হয়েছে। এভাবে প্রায় প্রতিটি দেশ থেকেই প্রবাসী আয় আসা কমে গেছে। যোগাযোগ করা হলে মালয়েশিয়ার এনবিএল মানি ট্রান্সফারের প্রধান নির্বাহী শেখ আকতার উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে মালয়েশিয়ার সব রেমিটেন্স হাউস ও ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শ্র্রমিকদেরও কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে টাকা পাঠানো আপাতত বন্ধ। ঠিক কত দিন এমন থাকবে, তা বলা যাচ্ছে না।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ভাইরাসটির কারণে ব্যাপক হারে প্রবাসীরা আতঙ্কে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে ভিসা জটিলতাসহ নানা কারণে প্রতিদিন ফেরত আসছেন প্রবাসীরা। তারা চাকরি ছাঁটাইয়ের আশঙ্কায় রয়েছেন। এতে ওইসব দেশ থেকে রেমিটেন্স প্রবাহে নেতিবাচক ধারা দেখা দিয়েছে। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হচ্ছে করোনাভাইরাস। মধ্যপ্রাচ্যেও এই ভাইরাস হানা দিয়েছে। করোনার প্রভাব অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই। রেমিটেন্সের অর্ধেকেরও বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। এসব কারণে উর্ধগতির রেমিটেন্স নিয়ে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কোনভাবে এর নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে পারবে না। দেশের অর্থনীতির একমাত্র রেমিটেন্স ছাড়া সব সূচকই নিম্নমুখী। এখন করোনার প্রভাবে রেমিটেন্সের প্রবৃদ্ধির হারও হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। তাই রেমিটেন্স প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে নতুন শ্রমবাজারের দিকে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি যেসব দেশে বাংলাদেশী শ্রমিক কর্মকর্তা তাদের দেখভালের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে।

জানতে চাইলে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর জনকণ্ঠকে বলেন, করোনার কারণে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমছে। এমনিতেই জ্বালানি তেলের দাম কমছে, করোনার কারণে এতে আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর ফলে ওই দেশগুলোতে চাকরির চাহিদা কমবে। এটা বাংলাদেশের বিদেশী শ্রমবাজারে বড় আঘাত হানবে। ফলে প্রবাসী আয়ে বড় ধাক্কা আসবে। তবে দেশে এর প্রভাব পড়তে কিছুটা সময় লাগতে পারে। আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, করোনার কারণে দেশের অর্থনীতিতে যে ধাক্কা আসবে, তার জন্য সরকারের দিক থেকে বড় ধরনের হস্তক্ষেপ লাগবে। বাজেটে সহায়তা লাগবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংককেও বড় ভূমিকা নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, প্রবাসীরা কিছুটা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন। চাকরিচ্যুত কিংবা কর্মহীন হয়ে পড়বেন কি না, সে কারণে অনেকে টাকা পাঠাতে চাইবেন না। আবার দেশে পাঠালেও সে টাকার অপব্যবহার হবে কি না। এ ধরনের নানা সংশয়ে আছেন প্রবাসীরা। সার্বিক বিবেচনায় রেমিটেন্সেও করোনার প্রভাব পড়তে পারে। এটা অস্বাভাবিক নয়।

এদিকে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে আগামীকাল ৫ এপ্রিল বৈঠকে বসছে সরকার। এতে প্রবাসীকল্যাণ, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর প্রতিনিধিরা থাকবেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। প্রবাসীদের অনেকেই কর্মহীন। অনেকেরই কাজ থাকবে না। অনেককে পাঠিয়ে দিতে চাইছে সেসব দেশের সরকার। বহু দেশ বাংলাদেশের শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে বারবার তাগিদ দিচ্ছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। যারা সেসব দেশের জেলে আছেন, তাদের এখনই নিজ খরচে ফেরত পাঠাতে চায় দেশগুলোর সরকার। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন যারা অবৈধভাবে আছেন। আমরা আমাদের সব মিশনকে নির্দেশ দিয়েছি, প্রবাসীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে। এছাড়া আরও করণীয় ঠিক করতে আমরা বৈঠকে বসছি।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• সুদ পরিশোধেই গেছে সাড়ে ১১ হাজার কোটির বেশি টাকা
• অস্ট্রেলিয়ায় বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে চায় বাংলাদেশ
• বাংলাদেশ চায় শুল্কমুক্ত সুবিধা যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত শ্রম অধিকার
• সরকারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে
• পোশাকের ন্যূনতম ন্যায্যমূল্য চাইল বিজিএমইএ
• রাজস্ব ঘাটতি ২২ হাজার কোটি
• সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগী বাড়ছে
• ‘বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী চীন’
• শুধু কথায় কি মূল্যস্ফীতি ভিজবে?
• বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ ছাড়াল ১০০ কোটি ডলার
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved