[ অনলাইন ] 23/04/2024 |
|
|
ইআরডির প্রতিবেদন |
সরকারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে |
|
বিদেশি ঋণের বেশিরভাগই সুদ-আসলসহ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হচ্ছে * ঋণের অর্থছাড় বাড়লেও কমেছে অনুদানের অর্থ |
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের কারণে বিদেশি ঋণের প্রতি সরকারের ঝোঁক বেড়েছে। পাশাপাশি বিগত বছরগুলোতে নেওয়া ঋণ পরিশোধের চাপও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশকে এখন তুলনামূলক বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। ফলে প্রতি বছর সরকার যে বিদেশি ঋণ নিচ্ছে, তার বেশিরভাগই সুদ-আসলসহ ঋণ পরিশোধেই ব্যয় হচ্ছে। পাশাপাশি বেড়েছে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা অর্থছাড় ও প্রতিশ্রুতি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। সোমবার চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের বৈদেশিক ঋণ সহায়তার তথ্য প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ইআরডি জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সরকার ঋণ পরিশোধ করেছে ২৮ হাজার ২৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছিল ১৬ হাজার ৬৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ঋণ পরিশোধ বেড়েছে প্রায় দেড় গুণ। ঋণ শোধের পরিমাণ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে সুদ পরিশোধ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ঋণের বিপরীতে শুধু সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে ১১ হাজার ৬০১ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ। আর ডলারের হিসাবে সুদ পরিশোধ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। মূলত টাকার অবমূল্যায়নের কারণে আগের বছরগুলোতে নেওয়া ঋণের বিপরীতে সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে বেশি।
এতে দেখা যায়, প্রথম ৯ মাসে সরকার সুদ ও আসলসহ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে ২৫৭ কোটি ডলার। টাকার অঙ্কে ২৮ হাজার ২৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার যে ঋণ পরিশোধ করেছে তার মধ্যে আসল ঋণ ১৬ হাজার ৬৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বাকি ১১ হাজার ৬০১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা সুদ বাবদ দিতে হয়েছে। কিন্তু গত অর্থবছরের একই সময়ে সরকারের ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছিল ১৬ হাজার ৯৬৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে আসল ছিল ১২ হাজার ২০২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর সুদ ৪ হাজার ৭৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৭৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা সুদ দিতে হয়েছিল, চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে তার প্রায় দ্বিগুণ।
এ সময়ে ডলারের হিসাবে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ২৫৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার। যা আগের বছরে ছিল ১৭৩ কোটি ৩ লাখ ডলার। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৮৩ কোটি ডলার। এ সময় ঋণের বিপরীতে সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। আগের বছর ছিল ৪৮ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ সুদ পরিশোধ বেড়েছে ৫৭ কোটি ডলার।
অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বিদেশি ঋণের অর্থছাড় হয়েছে ৫৬৩ কোটি ১৬ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫৩৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে অর্থছাড় বেড়েছে ২৬ কোটি ৮৬ লাখ ডলার।
ঋণের অর্থছাড় বাড়লেও কমেছে অনুদানের অর্থ। অর্থবছরের ব্যবধানে যেখানে ঋণের অর্থছাড় বেড়েছে প্রায় ৩০ কোটি, সেখানে অনুদান কমেছে প্রায় ২ কোটি ডলার। এ সময় সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
এ সংস্থা অর্থছাড় করেছে ১৪০ কোটি ২৭ লাখ ডলার। জাপান ছাড় করেছে ১৩৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বিশ্বব্যাংক ছাড় করেছে ৯৬ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। এ ছাড়া রাশিয়া ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ডলার এবং চীন ৩৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে। ভারত দিয়েছে ১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বাকিগুলো অন্যান্য দাতা সংস্থা থেকে।
পাশাপাশি চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তার প্রতিশ্রুতিও বেড়েছে। ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, উন্নয়ন সহযোগীরা এ সময়ে ৭২৪ কোটি ২১ লাখ ডলার ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩০৭ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৪১৬ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে ৯৯২ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্য রয়েছে বলে জানা গেছে। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|