পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের ১০ কোটি ১৩
লক্ষ ৬২ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ
করছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) প্রথম কর্ম দিবসে সকাল থেকেই গ্রাহকদের ব্যাংকে
ভিড় করতে দেখা যায়। নিজেদের ব্যাংক হিসাবে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আছে কিনা
তা জানার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন তারা।
জানা গেছে, টাকা লোপাটের খবরে অনেক গ্রাহক তাদের
জমাকৃত টাকা অগ্রণী ব্যাংক থেকে উত্তোলন করার জন্য এসেছিলেন। এক পর্যায়ে
গ্রাহকের চাপে ব্যাংক কর্মকর্তারা হিমশিম খেলে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে
কাশিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে নিরাপত্তা বাহিনী এসে পরিবেশ শান্ত করেন।
ব্যাংকের গ্রাহক ফিরোজ হোসেন ও শিপন জানান, তাদের
জমাকৃত টাকা ব্যাংকে আছে কি না তা তারা যাচাই করতে এসেছিল। অনেকেই তাদের
হিসাবের সঠিক অর্থ জমা থাকায় সন্তোষ্ট প্রকাশ করেন। অনেকেই এ অনিয়মের মধ্যে
তাদের টাকার সঠিক নিরাপত্তা পাবে না মনে করে টাকা উত্তোলনের সিদ্ধান নেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে
হঠাৎ করে উপজেলার অগ্রণী ব্যাংক পরিদর্শনে আসেন রাজশাহী বিভাগীয় অগ্রণী
ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার আফজাল হোসেন ও পাবনার আঞ্চলিক শাখার
উপ-মহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফসহ ৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তারা দিন ভর
বিভিন্ন তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের
অভিযোগে তিন কর্মকর্তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
আটতকৃতরা হলেন
ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ও কাশিনাথপুর গ্রামের মৃত জান বক্সের ছেলে আবু
জাফর, ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও সুজানগরের দুর্গাপুর গ্রামের হারুন বীন
সালাম, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ও বেড়ার নতুন ভারেঙ্গার মৃত শুশিল চক্রবর্তীর
ছেলে শুব্রত চক্রবর্তী। এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার
উপ-মহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আটককৃতদের ৫৪ ধারায গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার সকালে
পাবনা আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। এদিকে
ব্যাংকের অর্থ অনিয়মের কারণে আটককৃতদের শুক্রবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সাঁথিয়া
কাশিনাথপুর অগ্রণী ব্যাংকের নতুন শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুর সবুর শেখ জানান,
গ্রাহকরা সকালে ব্যাংকে ভিড় করেছিল। তারা নিজেদের হিসাব বুঝে নিতে এসেছিল।
আমরা তাদের হিসাব বুঝিয়ে দিয়েছি। গ্রাহকদের বলা হয়েছে লোপাট যাওয়া টাকার
দায়বদ্ধ ব্যাংক, গ্রাহক নয়।