[ পাতা ১ ] 29/04/2024 |
|
|
|
ব্যাংকের ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের তথ্য প্রকাশের পরামর্শ আইএমএফের |
|
|
দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলছে। এজন্য পুনঃতপশিল ও অবলোপনের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কম দেখাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য ও এর ওপর করা পরিদর্শনের প্রতিবেদন গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত করতে বলেছে সংস্থাটি। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ পরামর্শ দেয় সফররত আইএমএফের প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা।
সূত্র বলছে, দেশের ব্যাংক খাতে দিন দিন খারাপ সম্পদ বেড়েই চলছে। এ কারণে কয়েকটি ব্যাংক অতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এসব ব্যাংকের গ্রাহকদের আমানত ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে বলে মনে করে আইএমএফ। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন গ্রাহকদের জন্য প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। যাতে গ্রাহকরা তাদের আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিজেরাই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। একই সঙ্গে ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন অব্যাহত আছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে সংস্থাটি। পরিদর্শন প্রতিবেদনগুলো গ্রাহকদের জন্য প্রকাশ করা হয় কি না, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আইএমএফের শর্তানুযায়ী ব্যাংকের খারাপ সম্পদের তথ্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমরা এরই মধ্যে অনেক তথ্য প্রকাশ করছি। এর বাইরে আরও কিছু তথ্য তারা প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছিল। সেগুলো প্রকাশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে প্রতিনিধিদল। পাশাপাশি ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার শর্তও রয়েছে। সে শর্ত অনুযায়ী খেলাপি ঋণ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ জানতে চেয়েছে সংস্থাটি।
অন্য এক বৈঠকে কী প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা হচ্ছে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জানতে চেয়েছে সংস্থাটি। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিরা ব্যাংক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে এরই মধ্যে নীতিমালা জারি করার তথ্য প্রতিনিধিদলের কাছে উপস্থাপন করেন। দেশের ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা তৈরিতে একীভূতকরণের প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, আইএমএফের প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসার আগেই ব্যাংক একীভূতকরণের বিষয়ে সব তথ্য তাদের পাঠানো হয়েছিল। এ কারণে তারা এ বিষয়ে খুব বেশি জানতে চায়নি। তবে এখন পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেসব বিষয়ে জানতে চেয়েছে তারা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক কালবেলাকে বলেন, আইএমএফ মাত্র আমাদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। ৮ মে পর্যন্ত ধাপে ধাপে এ বৈঠক হবে। তাই এ মুহূর্তে কোনো ধরনের মন্তব্য করছি না।
গত বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে ক্রলিং পেগ চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ও সফররত আইএমএফের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা নানা পর্যালোচনা ও যুক্তি উপস্থাপন করেন। পরে তারা প্রাথমিকভাবে এটি চালুর জন্য গভর্নরের ওপর দায়িত্বভার ছেড়ে দেন। সবকিছু ঠিক থাকলে গভর্নর সরকারের সর্বোচ্চ মহলে আলোচনা করে আগামী অর্থবছর থেকে ক্রলিং পেগ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ডলার বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যত কোনো উপায় না পেয়ে মন্দের ভালো হিসেবে ক্রলিং পেগের ওপর নির্ভর করা হচ্ছে। এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর বিভিন্ন দেশের মডেল কীভাবে ক্রলিং পেগকে নিয়ন্ত্রণ করত, সেগুলো বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হবে। বিষয়টি স্থায়ীভাবে চালু থাকবে কি না, তা নির্ভর করবে ডলারের বাজার পরিস্থিতি মূল্যায়নের ওপর।
এর আগে গত বুধবার সফররত প্রতিনিধিদলটি মুদ্রানীতি, মূল্যস্ফীতি, বিদেশি বাণিজ্যের ভারসাম্য ও আউটলুক, মুদ্রাবাজার, তারল্য ব্যবস্থাপনা, আর্থিক খাত সংস্কার, খেলাপি ঋণ ও সুদের হার বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করে। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|