Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
টিকে থাকতে পেপারলেস ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই [ অনলাইন ] 30/04/2024
টিকে থাকতে পেপারলেস ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই
একটি উন্নত দেশ, সমৃদ্ধ সমাজ, একটি ডিজিটাল যুগের জনগোষ্ঠী, রূপান্তরিত উত্পাদনব্যবস্থা, নতুন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি—সব মিলিয়ে আমরা একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখছি। ডিজিটাল বাংলাদেশের চমকপ্রদ উজ্জ্বল প্রকাশ ঘটেছে দেশের সামগ্রিক আর্থিক লেনদেন কার্যক্রমে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পর্যন্ত আর্থিক লেনদেনে নতুন এক বিপ্লব ঘটেছে। প্রান্তিক মানুষও এখন ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে স্বাচ্ছন্দ্য ও অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এটা আজ সবাই উপলব্ধি করছেন, আর্থিক খাতে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব। আগে দূরবর্তী উপজেলা বা জেলা সদরে গিয়ে ব্যাংক থেকে সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন ভাতা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বয়স্ক, বিধবা, অসচ্ছল, দরিদ্র, প্রতিবন্ধীদের অনেক দুর্ভোগ কষ্ট পোহাতে হতো। সাধারণ দুস্থ, দরিদ্র, অসহায় মানুষগুলোর সেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগের দিনের অবসান ঘটেছে। এখন ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তারা তাদের ভাতার টাকা পেয়ে যাচ্ছেন ঝামেলাবিহীনভাবে। বাংলাদেশ এখন হাতে হাতে নগদ লেনদেনের বদলে নগদবিহীন আর্থিক লেনদেনের, অর্থাত্ ক্যাশলেস সোসাইটির কথা ভাবছে। নগদ লেনদেনের ঝুঁকি, ঝামেলা ও বিড়ম্বনা এড়াতে ডিজিটাল মানি ট্রান্সফারে ঝুঁকে পড়ছেন দেশের মানুষ।
দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

ডিজিটাল বাংলাদেশ যুগে প্রবেশের কারণে আমাদের জীবনযাপন অনেকটা পালটে গেছে। আজকাল ব্যাংকের শাখায় না গিয়েও চেক উপস্থাপন না করে টাকা তোলা যাচ্ছে এটিএম বুথ থেকে। আগে ব্যাংকে গিয়ে টিটি কিংবা ডিডি অথবা পে-অর্ডার ইস্যুর মাধ্যমে টাকা পাঠাতে হতো। তাতে অনেক সময় লেগে যেত প্রাপকের কাছে টাকা পৌঁছাতে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পরবর্তী স্বপ্ন হচ্ছে, দেশের সব ফাইন্যান্সিয়াল ট্রানজেকশন ক্যাশলেস হয়ে যাবে। নগদ অর্থে আর লেনদেন হবে না। ক্যাশলেস সোসাইটি হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যত্। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাত্র ৫ সেকেন্ডে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স গ্রহীতার অ্যাকাউন্টে জমা হবে। সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা এই সেবা পাওয়া যাবে। এতে সাধারণ মানুষ তাদের মোবাইল ফোনে টাকা পাবেন। যে টাকাটা তারা একটা দোকানে গিয়ে খরচ করবেন, সেটাও তারা মোবাইল ফোনে পেমেন্ট করে দেবেন। তাদের হাতে আর ক্যাশ রাখার প্রয়োজন হবে না। তাদের কষ্ট করে আয় করা টাকাটা তাদের থেকে কেউ চুরি করে নিতে পারবে না। ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ হলে দুর্নীতি নির্মূলেও তা ভূমিকা রাখবে। আজ বাংলাদেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। তারা এখনো সম্পূর্ণ নগদ অর্থে লেনদেনের ওপর নির্ভরশীল। তবে এই নগদ টাকা তো চুরি হতে পারে। তাদের টাকা লুট হতে পারে; এখানে দুর্নীতির সুযোগ থাকে। আমরা যখন ক্যাশলেস সোসাইটিতে চলে যাব, তখন দুর্নীতির সুযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। আজ যত সরকারি ভাতা দেওয়া হয়, এটা কিন্তু সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেওয়া হয়। আগে টাকা চুরি হওয়ার, দুর্নীতি করার সুযোগ থাকত। সেই সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবার বিকাশ দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করছে। মোবাইল ফোন ও ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রক্রিয়ার ধরনও পালটে গেছে এখন। কয়েক বছর আগেও যা কল্পনা করা যায়নি, তা এখন সম্ভব হচ্ছে। এখন ডিজিটাল রেমিটারের মাধ্যমে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ খুব কম সময়ের মধ্যে সুবিধাভোগীর হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। গ্রামীণ দারিদ্র্যের মোকাবিলায় সরকারি নানা উদ্যোগ, প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী এবং গতিশীল করেছে অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ফাইন্যান্স। আমাদের দারিদ্র্য দূরীকরণে একটি কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে ডিজিটাল ফাইন্যান্সের বিভিন্ন বিষয় ইতিমধ্যে উজ্জ্বল সাফল্য দেখিয়েছে। এর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হয়েছে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ডিজিটাল ফাইন্যান্সের কোনো বিকল্প নেই—এটা সবাই উপলব্ধি করেছেন এর মধ্যেই। উদ্ভাবনী ক্ষমতার চর্চা এবং ডিজিটালাইজেশন বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবে আশা করা যায়। উচ্চাভিলাষী হলেও সরকারি ও বেসরকারি নানা উদ্যোগ এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিচ্ছে। সরকারি বিভিন্ন আর্থিক অনুদান, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, বিভিন্ন ধরনের ভাতা খুব সহজে সুবিধাভোগীর হাতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ডিজিটাল ফাইন্যান্স বা আর্থিক ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকর মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দেশের সর্বস্তরের জনগণকে আর্থিক সেবার আওতায় নিয়ে আনাটা মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। দেশের বেশির ভাগ মানুষ ব্যাংকিং সেবার আওতার বাইরে থাকায় তাদের পক্ষে আর্থিক লেনদেন বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু ডিজিটাল ফাইন্যান্স তাদের জন্যও আর্থিক লেনদেনের চমত্কার সুযোগ এনে দিচ্ছে। এর সুবাদে শুধু টাকা জমা দেওয়া কিংবা উত্তোলন অথবা অর্থ স্থানান্তর নয়, বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, ভ্যাট ও আয়কর পরিশোধ, ভর্তি ফি প্রদান, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি জমাকরণ প্রভৃতি কাজ ব্যাংকে না গিয়ে ঘরে বসেই সম্পন্ন করতে পারছেন সবাই। এতে ব্যাংকে যাওয়া-আসার সময় বেঁচে যাচ্ছে, ব্যাংকে সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের চাপ কমছে। তাছাড়া নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি দূর করেছে ইলেকট্রনিক ব্যাংকিং। ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ভিসা কার্ড ইত্যাদির ব্যবহার দিনে দিনে বাড়ছে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল ফাইন্যান্সের ব্যাপক জনপ্রিয়তার প্রমাণ মেলে।

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে বিশ্ব। সময়ের পরিক্রমায় পৃথিবী আজ হাতের মুঠোয়। শুধু পকেটে থাকা মোবাইল ফোন বের করলে পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে কী ঘটছে, দেখা যায়। এই ধারা থেকে ব্যাংকিং সেক্টর পিছিয়ে থাকবে কেন? একসময় যে ব্যাংক আমানত গ্রহণ, হিসাবরক্ষণ আর ঋণ প্রদানে সীমাবদ্ধ ছিল, আজ সেই ব্যাংকে কী নেই! শুধু একটি অ্যাকাউন্ট থাকলে বেতন গ্রহণ, ইউটিলিটিসহ প্রায় সব ধরনের বিল প্রদান সম্ভব। আগে যে ব্যাংকে সামান্য একটি হিসাব বের করতে লেজার বুক নামে বড় বড় হিসাব খাতা কখনো কখনো ঘণ্টাব্যাপী খুঁজতে হতো, আজ মাত্র একটি ক্লিকে সব হিসাব বের করা সম্ভব। প্রযুক্তির ছোঁয়া মানুষকে গড়ে তুলেছে স্মার্ট হিসেবে। তারা এখন ঝামেলা পছন্দ করেন না। সহজ জিনিসটাই তাদের বেশি পছন্দ। এই জটিল ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সহজ করার জন্য পেপারলেস ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই। পেপারলেস ব্যাংকিং হলো ব্যাংকিং কার্যক্রম ও লেনদেন, যা ইলেকট্রনিক উপায়ে পরিচালিত। এটি কাগজের ব্যবহার কমাতে, প্রক্রিয়াগুলো সংক্ষিপ্ত করতে এবং গ্রাহকদের আরো সুবিধাজনক উপায়ে আর্থিক হিসাব পরিচালনা করার পন্থা জোগায়। মানুষ আজকাল খুব একটা ক্যাশ বহন করতে চায় না। এতে রয়েছে ঝুঁকি আর ঝামেলা। যেখানে একটি বারকোড স্ক্যান করলে সব পেমেন্ট করা যায়, সেখানে এত ঝামেলা না নেওয়াই স্বাভাবিক। তাই এখন ব্যাংকগুলো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে। ব্যাংকে গিয়ে চেক লেখা, কাউন্টারে গিয়ে লাইনে দাঁড়নো বা নির্দিষ্ট লোকেশনে গিয়ে ব্যাংকের শাখায় টাকা জমা-উত্তোলন যেমন কষ্টের, তেমনি সময়ের অপচয়। তাই এখন ব্যাংকগুলো ব্যস্ত জায়গাগুলোতে সিআরএম বুথের ব্যবস্থা করেছে, যেখানে অল্প সময়ে টাকা জমা ও উত্তোলন করা যায় কোনো চেক লেখার ঝামেলা ছাড়াই। কোথাও ঘুরতে যাবেন, টিকিট বা হোটেল বুকিং দেওয়া প্রয়োজন, অনলাইনে টিকিট কেটে বা হোটেল বুকিংয়ে পেমেন্টে পাচ্ছেন আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট। পকেটে থাকা ক্রেডিট কার্ড থাকলে হয়ে যাচ্ছে সমস্যার সমাধান। মানুষ আজকাল একের ভেতর সব চায়। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আজ শুধু সঞ্চয়ের জন্য নয়; বেতন গ্রহণ, অর্থ প্রদান, ই-টিকিটিং—সব কাজ করতে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টই যথেষ্ট। বলে রাখা দরকার, এই পেপারলেস ব্যাংকিং ব্যবস্থার নেপথ্যে আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা উদ্যোগ, যার মধ্যে বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্য। তারও নেপথ্যে আছে বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন। মূলত ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকারের দেখানো এই স্বপ্ন যত বাস্তব রূপ নিয়েছে, ততই দেশের অন্য যে কোনো খাতের চেয়ে ব্যাংক খাত দ্রুত পেপারলেস হওয়ার পথে আগাচ্ছে। ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংকও বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন তাদের সব প্রকল্পের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘ব্যাংক ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’কে সবচেয়ে সফল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। ভবিষ্যতে পেপার মানির ব্যবহার অনেকাংশে কমে যাবে। ফলে এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে নতুন প্রযুক্তিতে বেশি বিনিয়োগ করতে হবে এবং সেবাকে সহজ ও সহজলভ্য করে তুলতে হবে। ভবিষ্যতে তীব্র প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে পেপারলেস ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করল সাউথইস্ট ব্যাংক
• কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করল সাউথইস্ট ব্যাংক
• এক্সিম ব্যাংক ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মধ্যে চুক্তি
• এক্সিম ব্যাংক ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মধ্যে চুক্তি
• জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়ন সুরা কৃষ্ণ চাকমার ইউসিবিতে যোগদান
• জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়ন সুরা কৃষ্ণ চাকমার ইউসিবিতে যোগদান
• জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়ন সুরা কৃষ্ণ চাকমার ইউসিবিতে যোগদান
• এক্সিম ব্যাংক ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফের মধ্যে ব্যাংকাসুরেন্স চুক্তি সই
• কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দিল সাউথইস্ট ব্যাংক
• এক মাসে ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved