Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
আবারও ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ  ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক [ পাতা-১৬ ] 06/05/2024
আবারও ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

আবারও ন্যাশনাল ব্যাংকের (এনবিএল) পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল রবিবার ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক খলিলুর রহমানকে প্রধান করে ১০ সদস্যের নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্যাংক সূত্রে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আগের পর্ষদের পারভিন হক শিকদারসহ অধিকাংশ পরিচালকই বাদ পড়েছেন। এর আগে গত বছরের  ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক এক আদেশ জারি করে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ বাতিল করেছিল।

গত বৃহস্পতিবার দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় সাড়ে চার মাস পর চেয়ারম্যানসহ চার পরিচালক একযোগে পদত্যাগ করেছেন ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে। ব্যাংকটির স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম ও সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল হোসেনও গত বৃহস্পতিবার একযোগে পদত্যাগ করেন।

এ প্রসঙ্গে সিরাজুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ সব স্বতন্ত্র পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। যার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করতে বাধ্য হয়েছে। 

এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জন কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে আরো শক্তিশালী করতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিকে চেয়ারম্যান করে পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। যাতে ব্যাংকটিতে সুশাসন নিশ্চিত হয়।

এ বিষয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করা অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি দেশের বাইরে একটি সেমিনারে আছেন, খুব বেশি কথা বলতে পারবেন না। তবে তারা ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের কারণ তিনি বাংলাদেশ ব্যাংককে জিজ্ঞাসা করতে  বলেছেন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ ( ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংশোধিত)-এর ৪৭ (১) এবং ৪৮ (১) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ বিআরপিডির (ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ) আদেশের মাধ্যমে অবিলম্বে কার্যকর করে বাতিল করা হয়েছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং ব্যাংকিং সুশাসন নিশ্চিতকল্পে ও জনস্বার্থে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের ১০ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ নতুনভাবে গঠন করা হয়েছে।

নতুন পর্ষদে আগের পর্ষদের অধিকাংশ সদস্যই বাদ পড়েছেন। একসময় ব্যাংকটিতে শিকদার পরিবারের কর্তৃত্ব থাকলেও বর্তমান পর্ষদে সেই পরিবারের কাউকে রাখা হয়নি। বাদ পড়েছেন পারভিন হক শিকদারও।

নতুন পর্ষদে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ন্যাশনাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক আলহাজ খলিলুর রহমান। এছাড়া পরিচালক হিসেবে রয়েছেন— ব্যাংকটির উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রতিনিধি পরিচালক লে. জে. মো. সফিকুর রহমান (অব.), প্রতিনিধি পরিচালক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াজুল করিম, ব্যবসায়ী ও প্রতিনিধি পরিচালক এরশাদ মাহমুদ, প্রতিনিধি পরিচালক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এহসানুল করিম, প্রতিনিধি পরিচালক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এ কে এম তফাজ্জল হক। এছাড়া স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে রয়েছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. হেলাল উদ্দীন নিজামী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ড. রত্না দত্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জহুরুল হুদা।

এর আগে ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর নিয়ম ও বিধি ভাঙাসহ বিভিন্ন কারণ তুলে ধরে নানা অনিয়মে ধুঁকতে থাকা বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি নতুন পর্ষদ গঠন করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আবারও পর্ষদ ভাঙার কারণ হিসেবে জানা গেছে, বেসরকারি খাতের ইউসিবি ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংককে মার্জ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ন্যাশনাল ব্যাংক বর্তমানে ভালো কাজ করছে। ফলে তারা এখনই মার্জ হতে চায় না। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ারের এমন বক্তব্যের পরই বাংলাদেশ ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরিচালক জানান, তারা ন্যাশনাল ব্যাংকের সার্বিক উন্নয়নে এবং ব্যাংকটিকে আবার ঘুরে দাঁড়াতে কাজ করছেন। ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নিরলসভাবে পরিশ্রম করছেন। তারপরও তাদের কাজে বাধা তৈরি করায় গত বৃহস্পতিবার পর্ষদের অধিকাংশ পরিচালক পদত্যাগ করেছেন।

গত ৯ এপ্রিল ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ কাদরীকে ডেকে সংকটে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংককে একীভূত করার পরামর্শ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। জানা গেছে, ন্যাশনাল ব্যাংককে এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

তখন ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, কোনো ব্যাংক তাদের একীভূত হওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকও কোনো ব্যাংকের সঙ্গে তাদের একীভূত হতে বলেনি। ফলে কারো সঙ্গে একীভূত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। একীভূত হতে হলে দুই পক্ষের সদিচ্ছা প্রয়োজন। না হলে সেটা অধিগ্রহণ হয়ে যায়। তাদের নতুন করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা চেষ্টা করে দেখবেন ব্যাংকটিকে ভালো করা যায় কি না।

এর ধারাবাহিকতায় ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় একীভূত হওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, যেহেতু ন্যাশনাল ব্যাংকে নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নিয়েছে, তাই এখনই একীভূত হওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হবে না। বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে ব্যাংকটির আর্থিক স্বাস্থ্য ভালো করার চেষ্টা করা হবে। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

 

No link found
 
 
 
 
Today's Other News
• কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রহস্যজনক লুকোচুরি
• এক্সিম ব্যাংক ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মধ্যে ব্যাংকাস্যুরেন্স চুক্তি সই
• রাজধানীর লা ভিঞ্চি হোটেল ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন
• ডলার বাজারের স্থিতিশীলতায় ক্রলিং পেগ কতটা সহায়ক
• অগ্রণী ব্যাংকে ৫ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা
• অগ্রণী ব্যাংকে ৫ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা
• কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো সাউথইস্ট ব্যাংক
• অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবসায়িক অগ্রগতি বিষয়ক সভা
• ইউসিবিতে যোগ দিলেন কৃষ্ণ চাকমা
• ইউসিবিতে যোগ দিলেন কৃষ্ণ চাকমা
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved