Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
 পণ্য আমদানির শর্ত শিথিল করতে বলেছে আইএমএফ [ অনলাইন ] 08/05/2024
পণ্য আমদানির শর্ত শিথিল করতে বলেছে আইএমএফ

ডলার সঙ্কটের কারণে বেশ কিছু পণ্য বিশেষ করে গাড়িসহ বিলাসজাত পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি করা হয়েছিল। এসব পণ্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিন দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। এর প্রভাবে পণ্য সামগ্রিক আমদানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। এমনি পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ বিদ্যমান এলসি মার্জিন শিথিল করতে পরামর্শ দিয়েছে। আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত হিসেবে সফররত সংস্থাটির প্রতিনিধিদলের সদস্যদের বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংককে এ পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দুই সপ্তাহের সফরে সংস্থাটির প্রতিনিধিদল গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে শেষ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, ডেপুটি গভর্নররাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি হিসেবে ৬৮ কোটি ডলার ছাড়ের জন্য আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছিল ইতোমধ্যে তার বেশির ভাগই পূরণ করা হয়েছে। তবে, শর্ত অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ করা যায়নি। এর কারণ তুলে ধরা হয়েছে তাদের কাছে। যেমন ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার জন্য মার্চ শেষে ১৯ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার ও জুন শেষে ২০ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার নিট রিজার্ভ সংরক্ষণের শর্ত ছিল আইএমএফের। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের নিট রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। বৈঠকে রিজার্ভ সংরক্ষণের শর্ত শিথিল করতে বলা হয়েছে। তারা শর্তানুযায়ী রিজার্ভ সংরক্ষণ করতে না পারার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যৌক্তিক কারণ ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে। আর এ কারণে তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে কোনো সংশয় নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার আন্তঃপ্রবাহের সাথে বহিঃপ্রবাহের কোনো সমন্বয় হচ্ছে না। অর্থাৎ রফতানি আয়, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক ঋণ, অনুদানের মাধ্যমে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসছে তা দিয়ে আমদানি ব্যয় ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে প্রতি মাসেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দিয়ে আংশিক ঘাটতি মেটাতে হচ্ছে। আর এ কারণে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ প্রতি মাসেই কমে যাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ যেখানে ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছিল, সেখানে এখন নিট রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি করা হয়েছিল। বিশেষ করে, গাড়িসহ বিলাসজাত পণ্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিন রাখার নির্দেশনা ছিল। এতে আমদানি ব্যয় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু এর পরেও কাক্সিক্ষত হারে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকছে না। সফররত আইএমএফের প্রতিনিধিরা পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে পণ্য আমদানির ওপর বিদ্যমান কড়াকড়ি পরিহার করতে পরামর্শ দিয়েছে। অর্থাৎ আমদানির শর্ত শিথিল করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রেমিট্যান্স আহরণের জন্য এক দর, রফতানির জন্য আরেক দর এবং আন্তঃব্যাংকের জন্য আরেক দর নিয়ে কথা হয় বৈঠকে। আইএমএফ বিনিময় হারের ওপর হস্তক্ষেপ না করার বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে। গতকাল সংস্থাটির সফররত প্রতিনিধিরা আগামী জুনে অর্থ ছাড়ের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করেছেন। গতকাল আইএমএফ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা এ তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, আগামী জুনে তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে নিশ্চিত করতে গতকাল আইএমএফ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ধারাবাহিক বৈঠকে চুক্তির বিভিন্ন দিক চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ বছরের জুন নাগাদ দেশের নিট বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ২০.১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ, ঋণদাতা সংস্থাটি এটা কমিয়ে ১৭-১৮ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনতে পারে বলেও জানান তারা। একই সাথে চতুর্থ কিস্তি পাওয়ার জন্য আগামী অক্টোবর ও ডিসেম্বর নাগাদ নিট রিজার্ভের টার্গেটও নতুন করে নির্ধারণ করে দেয়া হবে। দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আগেও নিট রিজার্ভের শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। তখন আগামী মার্চ ও জুনের জন্য লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে নির্ধারণ করে এমওইউ স্বাক্ষর করে আইএমএফ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা বলেন, আইএমএফের সাথে সরকারের উল্লেখ করার মতো কোনো দ্বিমত নেই। ভর্তুকি কমানো, রাজস্ব ও রিজার্ভ বাড়ানোসহ আইএমএফ যেসব বিষয় বাস্তবায়ন করতে শর্তারোপ করছে, সরকারও সেগুলো বাস্তবায়নে করতে কাজ করছে।

অপর এক কর্মকর্তা বলেন, আগামী জুন-ভিত্তিক রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা নিয়েও সংশয় রয়েছে সরকারের। তাই জুনভিত্তিক রাজস্ব আদায়ে আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রাতেও ছাড় চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। নতুন এমওইউতে (সমঝোতাস্মারকে) এ ক্ষেত্রেও ছাড় দিতে পারে সংস্থাটি।

প্রসঙ্গত, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কমতে থাকার মধ্যে গত বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফের সাথে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে এই ঋণ ছাড় করা হবে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফ ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের প্রথম কিস্তি ছাড় করে। আর ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড় করে।

News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• রাজস্ব আদায়ে অগ্রগতি নেই, ৭ ভবন নির্মাণের তোড়জোড়
• সোনা কি রিজার্ভ মুদ্রা হয়ে উঠছে
• ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়াতে ইএসজি কমপ্লায়েন্সের চাহিদা বাড়ছে
• শ্রমিকদের পেছনে রেখে বাজেট হতে পারে না
• বাড়বে ভ্যাট, ভুগবে ভোক্তা
• অটোগ্যাস স্টেশন নির্মাণে ১০ বছর শুল্কমুক্ত সুবিধা চান ব্যবসায়ীরা
• মূল্যস্ফীতি: অর্থনীতির এ দুষ্টক্ষত নিরাময় জরুরি
• মেরিটাইম সিল্ক রোডে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
• বাজেটে শ্রমিকের জন্য রেশনিং বরাদ্দের দাবি
• যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল কাজ করছে না, আরো চীনমুখী হচ্ছে বাংলাদেশ
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved