[ পাতা ৩ ] 05/12/2022
 
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের প্রবৃদ্ধি ৬০ শতাংশ
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানি। চলতি বছরের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ৯ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে নেওয়া পোশাকের প্রায় ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ৭ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলাদেশ থেকে তাদের পোশাক আমদানি ৫০ দশমিক ৯৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ পোশাক আমদানির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে দেশটির ‘অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল’ (অটেক্সা)। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০২২ সময়ের এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির চিত্র উঠে এসেছে।

অটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি ৩৪ দশমিক ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পোশাক আমদানির তৃতীয় বৃহত্তম উৎস হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ শেয়ার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম পোশাক সরবরাহকারী চীন। এরপরে ১৮ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ভিয়েতনামের অবস্থান। চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ২৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে ১৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি ১৪ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, বছরওয়ারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শীর্ষ পোশাক সরবরাহকারী দেশগুলোর প্রবৃদ্ধিও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। অন্যান্য শীর্ষ দেশগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া ৫৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ, ভারত ৫৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ, কম্বোডিয়া ৪৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ, পাকিস্তান ৪০ দশমিক ১১ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া ৩৯ দশমিক ৬১ শতাংশ।

সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে যায়। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে বাজারটি আবারও বাংলাদেশকে বেছে নেয়। করোনার কারণে রপ্তানি নিম্নমুখী হলেও গত বছরের মে মাস থেকে বাজারটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি আবার বাড়াতে শুরু করে।

এদিকে ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা, ইউরোস্ট্যাট জানুয়ারি-আগস্ট ২০২২ সময়ে পোশাক আমদানির সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানিতে সরবরাহকারী সব শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ১৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে ইউরোপ। যেখানে বিশ্ব থেকে তাদের মোট আমদানির পরিমাণ ছিল ৬৭ দশমিক ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের।

এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, মূলত করোনা মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এবং ভোক্তাদের কেনাকাটা বৃদ্ধির ফলে খুচরা বিক্রি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এটি ভালো খবর।

তিনি বলেন, আশার দিক হচ্ছে গত ৯ মাসে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি অনেকাংশে বেড়েছে; যা আসলেই দেশীয় উদ্যোক্তাদের আশা জাগিয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ বরাবরের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানিতে তৃতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে।