[ পাতা ৭ ] 27/04/2024
 
ঋণ না বাড়িয়ে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে
বাংলাদেশের জিডিপির আকার বেড়ে ২০২৩ সালে ৪২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে বলে আইএমএফের অভিমত, যা বৈশ্বিকভাবে ৩৫তম। দেশের জিডিপির আকার বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সরকারের টার্গেট ২০৪০ সালের মধ্যে জিডিপির আকার এক ট্রিলিয়ন ডলারে নেওয়া। তবে, অনেকের অভিমত, তা ২০৩০ সালের মধ্যেও হতে পারে। তবে বলাই বাহুল্য, জিডিপির আকার যে হারে বাড়ছে, সে হারে রাজস্ব আয় বাড়ছে না। কর জিডিপির হার ৮-৯% চলছে দীর্ঘদিন যাবত! ফলে রাজস্ব আয় দিয়ে রাজস্ব ব্যয় নির্বাহ হচ্ছে। এডিপির বেশিরভাগ ঋণনির্ভর থাকছে। 

এ জন্য রাজস্ব বিভাগের সক্ষমতার অভাব, বেশিরভাগ মানুষের কর ফাঁকি দেওয়ার মানসিকতা এবং অনেক ব্যবসায়ীর আদায়কৃত সব ভ্যাট সরকারি খাতে জমা না হওয়া দায়ী। তাই কর জিডিপির হার বৈশ্বিকভাবে নি¤œ! ফলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ করতে হচ্ছে, যা বাড়তে বাড়তে মাত্রাতিরিক্ত হয়েছে। দেশ এখন ঋণের ফাঁদে পড়েছে। সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ এবং পরিশোধের সক্ষমতা’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় গত ৪ এপ্রিল। তাতে দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা বলেন, বিদেশি ঋণ পরিশোধ পরিস্থিতি অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করেছে। বিশেষ করে স্বল্পমেয়াদী ঋণের চাপ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। ঋণ পরিশোধে অর্থ সংকটে রয়েছে সরকার। পুরনো ঋণ পরিশোধ করতে নতুন ঋণ নিতে হচ্ছে। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আগামীতে আরও সংকট তৈরি হবে। 

অথচ, ঋণের তেমন প্রতিফলন নেই জনজীবনে। বর্তমানে বিদেশি ঋণ জিডিপি অনুপাত হয়েছে ২১.৬%, যার ৮০% সরকারি ও ২০% বেসরকারি। আর দেশীয় ঋণের পরিমাণ বিদেশি ঋণের দ্বিগুণ হয়েছে। সেমতে বর্তমানে দেশের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে মোট জিডিপির প্রায় ৬৫%! তবুও ঋণ গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। উক্ত সংলাপে ড. রেহমান সোবহান বলেন, ‘স্বল্পমেয়াদী বিদেশি ঋণের কারণে বিপজ্জনক পথে রয়েছে বাংলাদেশ। শ্রীলংকা এ ধরনের স্বল্পমেয়াদী ঋণের ফাঁদে পড়েছিল’। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘দেশের মানুষের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ এখন দেড় লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। তন্মধ্যে বৈদেশিক ৩১০ ডলার ও অভ্যন্তরীণ প্রায় ৮৫০ ডলার (বিবিএস’র তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাথাপিছু গড় আয় দাঁড়িয়েছে ২,৭৪৯ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ মাথাপিছু গড় আয়ের প্রায় অর্ধেক হয়েছে মাথাপিছু গড় ঋণ)। গত দেড় দশকে ঋণ করে অনেক মেগা প্রকল্প করা হলেও তা মানুষের উন্নতিতে কাজে আসেনি। রাজস্ব আয়ের ৩৩% ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়। অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঋণ করে ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে। একটা ভালো অর্থনীতি মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলে গেছে’। 

এছাড়া, অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুরের মতে, ‘রাজস্ব আয়ের অনুপাতে বাংলাদেশের ঋণ ৩৮০ শতাংশের মতো। তাই বাংলাদেশকে উচ্চ ঋণগ্রস্ত দেশ বলা যায়’। অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম জার্মান বেতারে বলেন, ‘আমরা ঋণ করে অনেকগুলো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নিয়েছি এবং এখনো নিচ্ছি। এসব প্রকল্পে যত খরচ হওয়ার কথা তার চেয়ে অনেক বেশি খরচ করেছি। এগুলো আমরা পুঁজি লুণ্ঠনের জন্য ব্যবহার করেছি। ফলে বাংলাদেশে প্রকল্পের খরচ বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ’। বিবিএসের খানা আয় জরিপ-২০২২ মতে, ‘২০২২ সালে জাতীয়ভাবে প্রতিটি পরিবারের গড় ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩,৯৮০ টাকা, যা ২০১৬ সালে ছিল ৩৭,২৪৩ টাকা। ছয় বছরের ব্যবধানে প্রতিটি পরিবারের ঋণ বেড়েছে ১১১.১০%’। বর্তমানে এটা আরো বেড়েছে! বলতে গেলে দেশ ও দেশবাসী ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছে!

অন্যদিকে, দেশের অধিকাংশ ব্যাংক ঋণ খেলাপিতে জর্জরিত। আইএমএফের মতে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল পৌনে ৪ লাখ কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ২৫%। এছাড়া, নানা অনিয়ম ও আমানত সংকট তো রয়েছেই। সব মিলে ব্যাংকগুলো পঙ্গু হয়ে গেছে। তাই দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সাথে একীভূত করা হচ্ছে। এটা স্বেচ্ছায় না হলে দুর্বল ব্যাংককে একীভূত হতে বাধ্য করা হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। ইতোমধ্যেই সরকারি ও বেসরকারি ৫টি দুর্বল ব্যাংক ৫টি সবল ব্যাংকের সাথে একীভূত হওয়ার সমঝোতা করেছে। 

এভাবে ব্যাংকের সংখ্যা দুই-তৃতীয়াংশে নেমে আসতে পারে। তারপরও এতো বিপুল সংখ্যক ব্যাংকের দরকার নেই ডিজিটাল যুগে। স্মরণীয় যে, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ব্যাংকের সংখ্যা নিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম মুহিত বলেছিলেন, ‘ছোট্র অর্থনীতির দেশে এতো ব্যাংকের দরকার নেই। তবুও আমি নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দিতে বাধ্য হচ্ছি’। এরপর ব্যাংক প্রতিষ্ঠার হিড়িক পড়ে এবং শুরু হয় ঋণের নামে ব্যাপক লুটপাট। ফলে যা হবার তাই হয়েছে। খেলাপি ঋণের ভারে ব্যাংকগুলো ন্যূজ্ব হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত মার্চ’২৪ প্রকাশিত তথ্য মতে, দেশে তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা ৬১টি। তন্মধ্যে দুর্বল ও অতি দুর্বল ব্যাংকের সংখ্যা ৩৮। এখন দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকগুলোর সাথে একীভূত করা হচ্ছে। 

অবশ্য ৫টির সিদ্ধান্ত হওয়ার পর এটা স্থগিত করা হয়েছে বাস্তবতা দেখার জন্য। তবুও ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চাকরি হারানোর আতংক সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাহকরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। টিঅআইবি বলেছে, তড়িঘড়ি ও জোরপূর্বক একীভূতকরণ ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ। একীভূতকরণ স্থগিত চেয়েছে সংস্থাটি।কিন্তু তা হবে বলে মনে হয় না। ব্যাংকের সংখ্যা অনেক কমানোর পরও ব্যাংকগুলো যদি স্বাধীনভাবে চলতে না পারে, ব্যাংকিং নীতি অনুসরণ না করে এবং ব্যাংক কমিশন গঠন করা না হয়, তাহলে কোনো লাভ হবে না। ইতোপূর্বে শেয়ার কেলেঙ্কারিতে এই খাত ধ্বংস হয়ে গেছে, যা আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি!

দেশের বিপুল সংখ্যক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে। তাই দেশ বিদেশী পণ্য নির্ভর হয়ে পড়েছে। এছাড়া, সব ধরনের দূষণ, মাদক ব্যবহার, জ্বালানি সংকট, বেকারত্ব, খুন-জখম, দুর্ঘটনা, অপহরণ, অর্থ পাচার, মূল্য বৃদ্ধি, বেসরকারি বিনিয়োগ স্বল্পতা, টাকার অবমূল্যায়ন, রিজার্ভ সংকট, বাণিজ্য ও ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ঘাটতি, পুষ্টিহীনতা, ভারতের প্রতি চরম নতজানুতা এবং আয় বৈষম্য ইত্যাদিতে বিশ্বে সেরা হয়েছে দেশ। বিবিএসের তথ্য মতে, ২০২২ সালে গিনি সহগের মান ছিল শূন্য দশমিক ৪৯৯, যা ২০১৬ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৪৮২ ও ২০১০ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৪৫৮ (সাধারণত দশমিক ৫০০ হলেই উচ্চ আয় বৈষম্যের দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়)। দুর্নীতিও ব্যাপক! সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম মুহিত বলেছিলেন, ‘আগে পুকুর চুরি হতো, এখন সাগর চুরি হয়’। এছাড়া, গত ১৮ এপ্রিল দেশের সিনিয়র ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা বলেন, ‘গত ৫০ বছরে দেশের উন্নতিও বেড়েছে দুর্নীতিও বেড়েছে। দুর্নীতির মাধ্যমে ধনীদের উন্নতি হয়েছে রকেট গতিতে আর সাধারণ মানুষের উন্নতি হয়েছে শম্ভুক গতিতে। দুদক ও ইসিসহ সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানই ঠিকভাবে কাজ করছে না’। দেশে কতিপয় লোক দুর্নীতির প্রতীকে পরিণত হয়েছে! টিআইয়ের দুর্নীতির ধারণা সূচক-২০২৩ মতে, বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ দশম (আগের বছরের চেয়ে ২ ধাপ অবনমন)। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দেশের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে। কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, বীরবিক্রম সম্প্রতি বলেছেন, দেশে এখন হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে ১৯৭২-৭৩ সালের মতো। আর বিরোধী দলগুলোর নেতাদের মতে, অর্থনীতিসহ দেশের সব কিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরাও ইতোপূর্বে এই কলামে অধিকাংশ মেগা প্রকল্পকে মেগাজ্বালা এবং অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিকে গলার ফাঁস, অউৎপাদনশীল ব্যয় বৃদ্ধিকে মহাবাটপারি ও রিজার্ভ বন্দক রেখে ঋণ গ্রহণ দেশের মর্যাদাহানিকর বলে অভিহিত করেছি। তবুও এসব বন্ধ হয়নি। কারণ, সরকারি অর্থ ব্যয় করতে পারলেই নিজের পকেট ভারী করা যায়। তাই অউৎপাদনশীল ও কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অন্ত নেই। যেমন: সংযোগ সড়ক ছাড়াই ব্যয়বহুল সেতু নির্মাণ। তবুও শাস্তি নেই। এমনকি শেয়ার ও ব্যাংক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি হয়নি! প্রকৃত গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও জবাবদিহি না থাকায় দেশের এই দুর্গতি হয়েছে।

যা’হোক, দেশের চলতি আর্থিক অবস্থায় গৃহীত মাত্রাতিরিক্ত ঋণ পরিশোধ হবে কীভাবে তা চরম দুঃশ্চিন্তার বিষয়। তাই ঋণের ভার আর না বাড়িয়ে রাজস্ব আয় বাড়িয়ে উন্নতি করতে হবে। আইএমএফও তাই বলেছে। দেশে কর জিডিপির হার বাড়ানোর সুযোগও রয়েছে। যেমন: গত ২ এপ্রিল প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন হালনাগাদ’ শীর্ষক প্রতিবেদন মতে, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার অতিরিক্ত ভ্যাট আদায় করা সম্ভব ছিল। তবে ওই বছর সরকার মাত্র ৮৫ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট সংগ্রহ করতে পেরেছিল। অর্থাৎ আদায়যোগ্য ভ্যাটের চেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ কম ভ্যাট আদায় হয়েছে। যেসব নীতি ও দুর্বলতার কারণে ভ্যাট আদায় হয়নি, তন্মধ্যে রয়েছে বড় অঙ্কের ভ্যাট ছাড়, ভ্যাট আদায় পদ্ধতিতে ফাঁকফোকড় থাকা, নিয়মের অপর্যাপ্ত প্রয়োগ প্রভৃতি’। সিপিডি ৩ এপ্রিল’২৩ বলেছে, কর ফাঁকি ও কর এড়ানোর ফলে বছরে এনবিআরের ২ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অর্থনীতি সমিতি বলেছে, ‘বাংলাদেশে ১৮ লাখ মানুষ আয়কর দেন। এই সংখ্যা হওয়ার কথা ৭৮.৩২ লাখ’। খবরে প্রকাশ, গত ২২ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ ৮৯ হাজার ৭৫। তন্মধ্যে চলতি অর্থবছরে ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ৪০৬ জন করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছে। অর্থাৎ টিআইএনধারীর এক তৃতীয়াংশও রিটার্ন জমা দেয়নি। এই অবস্থায়ও চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪.১০ লাখ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা দেশের সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু তা অর্জিত হবে কি-না সন্দেহ রয়েছে।

যাহোক, দেশে রাজস্ব আয় বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। তাই প্রচলিত কর রেয়াত অব্যাহত রেখে এবং করের হার বৃদ্ধি না করে রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। ভ্যাট ও আয়কর ফাঁকি বন্ধ করে এবং সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার করে করযোগ্য সব অর্থ আদায় করতে পারলেই সেটা হবে। সে লক্ষ্যে খুদে ব্যবসায়ী ছাড়া সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন স্থাপন করতে হবে। তাহলে আদায়কৃত সব ভ্যাটের হিসাব রাজস্ব বিভাগের হিসাবে বর্ণিত হবে অটোমেটিক। তাতে ব্যবসায়ীদের আদায়কত ভ্যাট সরকারকে ফাঁকি দেওয়া বন্ধ হবে। তাতে সরকারের ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে। এছাড়া, বন্ধ কল-কারখানাগুলো চালু করা হলে পণ্য উৎপাদন বেড়ে যাবে। তাতে ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে। বিনিয়োগ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে নিতে পারলেও ভ্যাটের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে। এছাড়া, সব টিআইএনধারীকে রিটার্ন দাখিলে বাধ্য করতে হবে। সে লক্ষ্যে যে ৪৩টি সেবামূলক কাজে টিআইএন ও আয়করের হালনাগাদন রিটার্ন দাখিলের সনদের ফটোকপি জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। উপরন্তু ফ্লাটে ও বিল্ডিংয়ের বাসিন্দা, গ্রাম-গঞ্জের ধনী মানুষ ও খুদে ব্যবসায়ী ছাড়া সব ব্যবসায়ী আয়কর দেওয়ার যোগ্য। তাই তাদের সকলের টিআইএন গ্রহণ এবং হালনাগাদ রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ আবাসের/প্রতিষ্ঠানের প্রকাশ্য স্থানে টাঙ্গিয়ে রাখার বিধান করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এসব করা হলে কর-জিডিপির হার তিনগুণ বেড়ে যাবে এবং তা আদায়ের স্থায়ী পথ সৃষ্টি হবে। তখন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণের প্রয়োজন কমে যাবে।