[ অনলাইন ] 01/07/2025 |
 |
|
|
চট্রগ্রামে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার জন্য জমি বরাদ্দের দাবি
|
|
|
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত অতিথিরা। ছবি: সময়ের আলো
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত অতিথিরা। ছবি: সময়ের আলো চট্রগ্রামে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানার জন্য জমি বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু।
বিজিএমইএ সভাপতি চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোশাক কারখানাগুলোকে টিকিয়ে রাখতে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা এই কারখানাগুলোকে একটি নির্দিষ্ট জোনে একত্রিত করে সমন্বিত গার্মেন্টস শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন। তিনি চট্টগ্রামে বিজিএমইএ এর অনুকূলে প্রতীকী মূল্যে একখন্ড জমি বরাদ্দের দাবি জানান।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসব দাবি জানান বিজিএমইএ সভাপতি।
জমি বরাদ্দের বিষয়ে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, অনতিবিলম্বে বিজিএমইএ ও বিডা প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে, যা এক সপ্তাহের মধ্যে একটি কর্ম-পরিকল্পনা পেশ করবে।
সোমবার (৩০ জুন) বিডা কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বিজিএমইএ এর ২০২৫-২৭ মেয়াদের নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদকে অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন নতুন অর্থবছরে ৭ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হবে
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- সহ-সভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান এবং পরিচালক সামিহা আজিম। বিডা ও বেজার পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিডার নির্বাহী সদস্য (ইনভেস্টমেন্ট ইকোসিস্টেম) মো. মোখলেসুর রহমান (অতিরিক্ত সচিব) এবং বেজার নির্বাহী সদস্য সালেহ আহমেদ (অতিরিক্ত সচিব)।
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল, উচ্চ ব্যাংক সুদ এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘন ঘন মূল্য বৃদ্ধি পোশাক শিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।” এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শিল্পের সম্প্রসারণ ও শিল্পকে এগিয়ে নিতে বিডার সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সভায় বিজিএমইএ প্রতিনিধিদল তাদের সাসটেইনেবিলিটি ও সার্কুলারিটি বিষয়ক বিভিন্ন উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন। তারা বলেন, পোশাক শিল্পে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার অপরিহার্য। পোশাক কারখানাগুলোতে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে জ্বালানি রূপান্তর উৎসাহিত করার জন্য এ ব্যাপারে পথনকশা প্রণয়ন এবং কারখানাগুলোকে প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন।
তারা আরও বলেন, পোশাক শিল্পে বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এই খাতে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে হলে যথাযথ নীতি প্রণয়ন, খাতটিকে করমুক্ত করা এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের তদারকির আওতায় আনা জরুরি। তারা এসব ব্যাপারে বিডার সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন কাল ব্যাংক হলিডে, লেনদেন বন্ধ
এ সময় বিজিএমইএ নেতারা বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ শ্রেণিকরণ নীতিমালা নিয়েও আলোচনা করেন। বিজিএমইএ নেতারা বর্তমান ৩ মাসের গ্রেস পিরিয়ডকে ৬ মাসে উন্নীত করার অনুরোধ জানান, কারণ অনেক সময় আর্থিক সংকটের কারণে উদ্যোক্তারা নির্দিষ্ট সময়ে কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ঋণ ক্লাসিফিকেশনের শিকার হন।
তারা বন্ড অডিট প্রক্রিয়াকে সময়ক্ষেপণকারী, হয়রানিমূলক এবং রফতানি বাণিজ্যের দৈনন্দিন কার্যক্রমে গুরুতর বাধার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। এ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও দ্রুততা নিশ্চিত করতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বন্ড নিরীক্ষার জন্য ২০টি প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করার বিষয়েও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানানো হয়।
বস্ত্র ও পোশাক মন্ত্রণালয় গঠনের প্রস্তাব: বিজিএমইএ নেতারা পোশাক শিল্পকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে না রেখে স্বতন্ত্রভাবে বস্ত্র ও পোশাক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোশাক শিল্পের অসামান্য অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি বিজিএমইএ নেতাদেরকে আশ্বস্ত করে বলেন, পোশাক শিল্পের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি খাতের অংশীদারিত্ব জোরদার করার পাশাপাশি বিডা সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। |
|