[ অনলাইন ] 13/07/2025
 
ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণে বিপর্যস্ত ইউনিয়ন ব্যাংক
ইসলামি শরিয়াহ্‌ ভিত্তিতে পরিচালিত ইউনিয়ন ব্যাংক ভয়াবহ খেলাপি সংকটে পড়েছে। ব্যাংকটির মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ২৮ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৩০২ কোটি টাকাই খেলাপি, যা মোট ঋণের ৮৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। এর মধ্যে ৬ হাজার ২৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা ইচ্ছাকৃতভাবে পরিশোধ করছেন না মাত্র ১১৯ জন সামর্থ্যবান গ্রাহক। বিনিয়োগের ওপর আরোপিত সুদ বা মুনাফা পরিশোধের সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তাঁরা পরিশোধ করছেন না। ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ বিশদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বড় ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের মধ্যে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার গ্রাহক বিএলইউ ইন্টারন্যাশনালের ৯৯ কোটি ২৯ লাখ, আগ্রাবাদ শাখার গ্রাহক এস আলম অ্যান্ড কোম্পানির ১১৬ কোটি ৭৬ লাখ, বনানী শাখার গ্রাহক রেঙ্ক ডেনিম টেক্সটাইল মিলসের ৩৫১ কোটি ৮০ লাখ, বনানী শাখার গ্রাহক রেঙ্ক সোহেল কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলসের ২০০ কোটি, বনানী শাখার গ্রাহক রোট অ্যাপারেলসের ১০৯ কোটি ৫২ লাখ, বনানী শাখার গ্রাহক রোট ট্রেডিং করপোরেশনের ১১১ কোটি ৫৭ লাখ, দিলকুশা শাখার গ্রাহক এম এম করপোরেশনের ৭৩ কোটি ৪২ লাখ, দিলকুশা শাখার গ্রাহক মজিদ ট্রেডার্সের ৫৮ কোটি ৩২ লাখ, দিলকুশা শাখার গ্রাহক মোস্তাক ট্রেডার্সের ৫৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা এসব ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ নিয়ে মহাবিপাকে রয়েছি। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তাঁরা অর্থ ফেরত দিচ্ছেন না। তাঁদের সামর্থ্য রয়েছে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। টাকা আদায়ে প্রয়োজনে আমরা আদালতে যাব। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করব। তখন মামলার খরচসহ আদায় হবে।’

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুলশান শাখার গ্রাহক আহসান আজাদের ১০২ কোটি ৯৮ লাখ, অনুপম ফ্যাশন ওয়্যারের ১১১ কোটি ১৬ লাখ, বেঙ্গল অ্যান্ড এম সার্ভিসের ১৮৫ কোটি ৬৯ লাখ, পাওয়ারপ্যাক মতিয়ারা জামালপুর পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেডের ১৮৫ কোটি ৮৭ লাখ, রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডের ২৫৫ কোটি ৪১ লাখ, হাটখোলা শাখার গ্রাহক কন্টিনেন্টাল বিজনেস হাউসের ৯৪ কোটি ১৪ লাখ, ইসলাম ট্রেডার্সের ৯৫ কোটি ৭ লাখ, এম তমিজউদ্দিনের ৯৯ কোটি ৭ লাখ, অগ্রণী ট্রেডিংয়ের ১৬৫ কোটি ৩৩ লাখ, অ্যালাইভ হোল্ডিং লিমিটেডের ১০৭ কোটি ৭২ লাখ, অ্যালাইন্স ইন্টারন্যাশনালের ১৫৫ কোটি ৯২ লাখ, এশিয়ান ইন্টারন্যাশনালের ১৪৩ কোটি ৬৫ লাখ, ফেমাস ট্রেডিং করপোরেশনের ১৯৩ কোটি ৬৩ লাখ, ইমেজ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ১৩৩ কোটি ৬৫ লাখ, ইনডেক্স ট্রেডিং কর্নারের ৮৮ কোটি ৫১ লাখ, ইন্টেলেক্সুয়াল করপোরেশনের ১৩৮ কোটি ৯৪ লাখ, এমটি ট্রেনিং কোম্পানির ৯৩ কোটি ৫ লাখ, মালেক এন্টারপ্রাইজের ৯৮ কোটি ৩৬ লাখ, মামসু ল্যান্ড অ্যান্ড প্রপার্টি ডেভেলপমেন্টের ১১২ কোটি ৫১ লাখ, মাসুদ ট্রেডিংয়ের ১৪৮ কোটি ৯৬ লাখ, মেক্সিমো করপোরেশনের ১৭৯ কোটি ৪৮ লাখ, মুকিম ট্রেড এজেন্সির ১৬৫ কোটি ৪৬ লাখ, নর্থপুল ইন্টারন্যাশনালের ১০৪ কোটি ৭৩ লাখ, প্রপার্টি সল্যুশনের ১১৪ কোটি ৬৩ লাখ, রফিক করপোরেশনের ১১৭ কোটি ২৪ লাখ, সেভ সিকিউরিটি অ্যান্ড ট্রেড সেন্টারের ১৮৯ কোটি ২৪ লাখ, তাহের ট্রেনিং করপোরেশনের ১২৩ কোটি ৪৪ লাখ, উদয়ন কনস্ট্রাকশনের ১০০ কোটি ৯৪ লাখ, ইউনিভার্সাল ট্রেডিং হাজারের ১২০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।