[ অনলাইন ] 27/04/2024 |
|
|
|
আইপিএল জুয়ায় নিঃস্ব হচ্ছে যুব সমাজ: পাচার হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা |
|
|
মাঠে খেলে দুই দল আর তৃতীয় পক্ষ খেলে মাঠের বাইরে। আইপিএল (ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ) খেলা হয় ভারতে আর বাজি হয় ঝিনাইগাতীতে। বাজিতে একেকটি ম্যাচকে ঘিরে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বাণিজ্যে নামে মাফিয়ারা। তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে শতশত মানুষ হচ্ছে নিঃস্ব।
ঝিনাইগাতীতে আইপিএল ক্রিকেট খেলা নিয়ে চলছে হরেক রকমের জুয়া। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খেলার ফলের ওপর হচ্ছে দুই পক্ষের জুয়ারির বাজি। ওই জোয়ারীদের বাজি আবার নিয়ন্ত্রণ করেন উপজেলার কয়েকটি এজেন্ট। আবার ওই এজেন্টদেরকে নিয়ন্ত্রণ করছেন স্থানীয় মাফিয়া চক্র। আর মাফিয়া চক্র প্রভাবশালীদের সাথে সখ্যতা করে চালিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন এই রমরমা ব্যবসা। অপরদিকে তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই হেনস্থার স্বীকার হতে হয় প্রতিবাদকারীকে।
পাঁচ-দশ হাজার টাকা দিয়ে জুয়া শুরু করে লোভে পড়ে একপর্যায়ে খোয়াচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সাধারনত ক্রিকেট খেলার বড় ইভেন্ট সামনে এলেই বেড়ে যায় জুয়ার কারবার। এখন চলছে বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) আসর। এই আসরকে ঘিরে ঝিনাইগাতী উপজেলার কয়েকজন এজেন্টের মাধ্যমে প্রতিদিন চলছে লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়া খেলা। আবার উপজেলার এজেন্টরা সাব এজেন্ট দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছেন ঝিনাইগাতী উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন।
এছাড়াও ওই এজেন্টরা অনলাইনে ক্রিকেট জোয়া খেলার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতিদিন শুধু ঝিনাইগাতী সদর থেকেই দেশের বাইরে পাচার করছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে মধ্যস্থতাকারীরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ জুয়ারিরা। অপরদিকে দেশ থেকে হচ্ছে বিদেশে টাকা পাচার আর এর প্রভাব পড়ছে পরিবার ও সমাজের উপর।
পরিচয় গোপন করে এক জুয়াড়ি জানান, সারাবছরই বিভিন্ন ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলে। তবে এবারের আইপিএল ক্রিকেট জুয়া খেলে তিনিসহ অনেকে পথে বসেছেন। আবার অনেকে ঋণগ্রস্ত হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুয়ার টাকা যোগান দিতে কেউ কেউ দামি মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল, জমি বন্ধক ও সোনার গহনাসহ নানা দামি জিনিসপত্র বন্ধক রাখছে। আর সুদের ব্যবসায়ীরাও থাকছেন জুয়ার আসরের পাশেই। শুধু তাই নয়, এখন অনলাইন বেটিং সাইটগুলোতেও দিব্যি চলছে এমন জুয়া। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পপুলার হচ্ছে Bet365 নামে একটি জুয়ার সাইট। এই সাইট দিয়ে ডলারের মাধ্যমে স্থানীয় এজেন্টরা গ্রাহকদের বাজি ধরিয়ে দেন। এতে করে প্রতি টুর্নামেন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা শুধু ঝিনাইগাতী উপজেলা থেকেই পাচার হয়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জুয়াড়ি বলেন, এখন আইপিএল টুর্নামেন্টের মাঝামাঝি সময় চলছে। এই আসর খেলে অনেকে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ঘরে বসেইে এজেন্টের কাছে ফোনের মাধ্যমে কথা বলে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা বাজি ধরা যায়। যে জোয়ারীর দল জিতবে তাকে পরের দিন ব্রোকারের লোকের মাধ্যমে জুয়ারীদের বাড়িতে টাকা পৌঁছে দেয়। এছাড়াও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকেন অনেক এজেন্টরা।
তারা আরো বলেন, জুয়া নিয়ন্ত্রণকারী যারা আছেন, তারা প্রভাবশালীদের সাথে সখ্যতা করে এই ব্যবসা দিনের পর দিন চালিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছেন। এই বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিবাদকারীকে নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে হয়রানি করা হয়। এতে করে তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে আসে না।
সমাজ সচেতনরা বলছেন, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবাধে চলছে জোয়ার মহোৎসব। এতে সমাজের অবক্ষয় ও অপরাধ প্রবণতা বেড়েই চলেছে। জুয়ার কালো থাবা থেকে সমাজকে মুক্ত করতে চাইলে অতি দ্রুত এই সিন্ডিকেটকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে শক্ত হাতে প্রতিহত করা প্রয়োজন তা না হলে ভবিষ্যতে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
|
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|